বাংলাদেশে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের আশা জানিয়েছেন দুই বাংলার বিশিষ্টজনেরা। নির্বাচনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপ সৃষ্টির সমালোচনা করে তারা বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনে না আসলে তাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) রাতে কলকাতার স্যার আশুতোষ মেমোরিয়াল হলে কলকাতার ‘বাংলা ওয়ার্ল্ডওয়াইড’ ও বাংলাদেশের ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’ যৌথ উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অংশ নিয়েছেন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ দেখেছেন কিংবা ওই সময়ের সাক্ষী বা পরে মুক্তিযুদ্ধের ওপর গবেষণা করেছেন দুই বাংলার এমন গুণী ব্যক্তিরা।
সভায় আলোচকরা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ধারায় এগিয়ে চলেছে। তবে বারবার মৌলবাদ ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি মাথাচাড়া দিলেও শেষ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে শক্তিই জয় পেয়েছে। বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন অনেকেই।
তারা বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সব রাজনৈতিক দলের অংশ নেয়া উচিত। অথচ বিএনপি এখনও ভোটে অংশ নেয়ার কথা ঘোষণা করেনি।
কলকাতার সাবেক মেয়র ও বর্ষীয়ান আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, বিএনপির ভূমিকা প্রকৃত পক্ষে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী।মুক্তিযদ্ধের ঐতিহ্য যদি বজায় রাখতে হয়, মুক্তিযদ্ধের ঐতিহ্য মানে কিন্তু একটি পুরোনো ধর্মনিরেপক্ষ নতুন দেশ তৈরি করা।
অভিনেতা ও সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পিযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিএনপি তো নির্বাচনে আসছেই না, উপরন্তু তারা মানুষের অধিকার নষ্টের জন্য, মানুষের যে মর্যাদা এবং বেঁচে থাকার যে অধিকার সেগুলোর বিরুদ্ধে কাজ করছে।
সাংবাদিক ও গবেষক অনমিত্র চট্টোপাধ্যায় বলেন, বাংলাদেশের মানুষ তাদের পছন্দ মত ভোট দিয়ে পছন্দের সরকারকে নির্বাচিত করবে। একই সঙ্গে সে দেশে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত থাকবে এটাই হচ্ছে আমাদের কাম্য।
বাংলাদেশের নির্বাচনে মার্কিনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব বা চাপ সৃষ্টির কৌশল নিয়েও প্রতিক্রিয়াও জানান অনেক বক্তা। তারা বলেন, বিএনপি নির্বাচনে না দাঁড়ালে তাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
কলকাতা প্রেসক্লাবের সভাপতি স্নেহাশীষ সুর বলেন, অন্যদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাগ গলানো কিন্তু অভিপ্রেত নয়। গত বছর থেকে আমরা দেখছি কোনো একটা বিষয়ে তাদের অধিক সক্রিয়তা। এটা আমাদের কাছে বেশ অবাক লেগেছে।
সাবেক বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, গণতন্ত্র ও নির্বাচন একটি অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। সেখানে কারো হস্তক্ষেপ করার অধিকার নেই।
আলোচনা সভা পরিচালনা করেন বাংলা ওয়ার্ল্ডওয়াইড আহ্বায়ক সৌম্যব্রত দাস। কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপহাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াসসহ উপদূতাবাসের কর্মকর্তারাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।