প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মনোনয়ন বাণিজ্যের জন্য হলেও নির্বাচনে আসুক বিএনপি৷ কার কত দৌড়, সেটি দেখা যাবে নির্বাচনে৷
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভার শুরুতেই এসব কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, এবারের ভোট সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ হবে৷ যেসব দল নির্বাচনে এসেছে, তাদের সাধুবাদ জানাই৷ যারা আসেননি এখনও তাদের বলছি ভোটে আসুন৷
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন চলাকালীনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসক সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে। তফসিল ঘোষণার পর থেকে কোনো অফিসার বদলি করা, এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বদলি, এগুলো নির্বাচন কমিশনারের অনুমতি ছাড়া করা যাবে না। যদি নির্বাচন কমিশন চায়, তখন সেটা পরিবর্তন করা যায়, তাছাড়া করা যাবে না।
এক সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে থাকা নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করতে আওয়ামী লীগ সরকার আইন করে দিয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যার অধীনে এখন দেশে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার ভুয়া ভোট মেনে নেয়নি দেশের মানুষ; তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। জিয়ার জন্ম কলকাতায়, এরশাদেরও ভারতে, খালেদা জিয়ার জন্মও ভারতে, সেই হিসেবে দেখেন, এই মাটির সন্তান হিসেবে আমাদের চেয়ে দরদ আর কারো বেশি হতে পারে না৷
জনগণের গণতন্ত্র, ভোটের অধিকার নিশ্চিত করাই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় চায় দেশে গণতন্ত্র থাকুক৷ বিএনপিকে সব সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়েছে, কিন্তু তাদের শাসনামলে আমরা সেটা পাইনি৷
তিনি আরও বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতির সুযোগ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করা হয়েছিল৷ বিদেশি যারা এখন বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে অনেক মাথা ঘামাচ্ছেন; তারা তো অতীতের এসব নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন না৷
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের ষড়যন্ত্র করেও পেরে ওঠেনি, কারণ জনগণ আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিল৷ মানুষ ভোট দেয়ার সুযোগ পেলে, সঠিক ভোটটিই দেয়৷ দেশে আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি আছে৷ বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলেও আওয়ামী লীগের শক্তি দেশের জনগণ।
তিনি বলেন,
আমরা যখন জনগণের জন্য কাজ করছি, ঠিক তখন আবারও ২০১৩ সালের মতো জ্বালাও-পোড়াওয়ের পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে। জ্বালাও-পোড়াওয়ের মাধ্যমে তারা নির্বাচনেই আসছে না৷ কারণ তারা জনগণের ওপর আস্থা রাখে না৷ ২০১৪ সালে আত্মবিশ্বাস ছিল না বলেই জ্বালাও-পোড়াও করে তারা নির্বাচনে আসেনি। ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে অপবাদ দিলেও কেউ এখন পর্যন্ত অনিয়মের একটিও সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দেখাতে পারেনি।
সন্ত্রাসী দল বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনগণকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তবে নিজেরা আইন হাতে তুলে নেবেন না৷ জনগণ ধরা শুরু করলে, ওই মুষ্টিমেয়রা ঠাঁই পাবে না৷
শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মনোনয়ন বোর্ডের সভায় ৩০০ সংসদীয় আসনে নৌকার প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।
প্রথম দিনের বৈঠকে খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হবে।
সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য যারা:
আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন সভাপতি হিসেবে রয়েছেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। সদস্য হিসেবে রয়েছেন আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, কাজী জাফর উল্লাহ, রমেশ চন্দ্র সেন, ওবায়দুল কাদের, মো. রশিদুল আলম ও দীপু মনি।