ভোক্তাদের পাশাপাশি দেশের ব্যবসায়ীদেরও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর সুরক্ষা দেয় বলে মন্তব্য করেছেন সংগঠনটির মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) ভোক্তা অধিদফতর ও সাজগোজ লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ বিষয়ক কর্মশালায় এ কথা বলেন ভোক্তার ডিজি।
ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণে অধিদফতর নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, তবে এই ক্ষেত্রে সফল হতে হলে প্রয়োজন ভোক্তাদের সচেতনতা ও সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা।
মহাপরিচালক বলেন, অধিদফতরের সচেতনতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং ডিপাটমেন্টের অধিদফতরের যৌথ উদ্যোগে মাস্টার্স অব প্রফেশনাল প্রোগ্রাম চালুকরণ ও বর্ণিত প্রোগ্রামসহ মার্কেটিং বিভাগের কারিকুলামে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়েছে।
মহাপরিচালক আলোচনায় বলেন, যেকোনো তথ্যর জন্য অধিদফতরের হট লাইন নম্বর ১৬১২১ এ ফোন করে ভোক্তাগণ তথ্য জানতে পারছেন।
কসমেটিস পণ্যের কথা উল্লেখ করে সফিকুজ্জামান বলেন, সকল কসমেটিকস প্যাকেটজাত। সেক্ষেত্রে মোড়কজাতকরণ বিধিমালা অনুসরণ করে পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় বিদেশি কসমেটিকসের ক্ষেত্রে আমদানিকারকের তথ্য থাকে না এবং আমদানিকারক কর্তৃক এমআরপি প্রদান করা হয় না।
এছাড়াও কসমেটিকস পণ্যে বিষাক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় যা ভোক্তার ত্বকের ক্ষতি করছে বলেও জানান ভোক্তার ডিজি। তিনি আরও বলেন, সাজগোজ লিমিটেডের পক্ষ থেকে নকল কসমেটিকসের তথ্য প্রদান করলে অধিদফতরের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করার মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ডিজি বলেন, ভোক্তাদের এই বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করা দরকার যে, বেশি দামে কোন পণ্য ক্রয় করলেও সেটা গুণগত মানসম্মত নাও হতে পারে।
সফিকুজ্জামান জানান, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিশেষত সয়াবিন তেল ও চিনির মূল্য (যা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ঠিক করে দেয়) স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে অধিদফতর কর্তৃক রিফাইনারি থেকে পরিবেশক পর্যায় পর্যন্ত তেল ও চিনির মজুত পরিস্থিতি জানার লক্ষ্যে একটি অ্যাপস তৈরির কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এর মাধ্যমে এসকল পণ্যের অবৈধ মজুত শনাক্ত করা সহজ হবে এবং এর সঙ্গে জড়িত অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অধিদফতর কর্তৃক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ সহজ হবে।
সাজগোজ লিমিটেডের চীফ অপারেটিং অফিসার সরদার মোহাম্মদ মিলকী মাহমুদ বলেন, আজকের কর্মশালার মাধ্যমে আমরা অনেক সমৃদ্ধ হয়েছি। এর মাধ্যমে অধিদফতরের সঙ্গে আমাদের বন্ধন আরও দৃঢ় হয়েছে। ভোক্তাদের সচেতন করার লক্ষ্যে আমাদের এক সঙ্গে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে। ভোক্তা স্বার্থে আমরা এক সঙ্গে কাজ করতে চাই।
ভোক্তা অধিদফতরের প্রশাসন ও অর্থ বিভাগের পরিচালক মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, আজকের কর্মশালা থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। কর্মজীবনে আমাদের মানবিক হতে হবে এবং প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধাচারের চর্চা করতে হবে। তিনি মূল ডিলার থেকে পণ্য সংগ্রহ করার জন্য সাজগোজ লিমিটেডকে পরামর্শ দেন। পরিশেষে তিনি ভোক্তাদের সচেতন করার লক্ষ্যে সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করার কথা বলেন।
কর্মশালায় ভোক্তা অধিদফতরের কার্যক্রম ও গবেষণাগার বিভাগের পরিচালক ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন, সাজগোজ লিমিটেডের চীফ কনটেন্ট অফিসার সিনথিয়া সারমিন ইসলাম প্রমুখ আর উপস্থিত ছিলেন।