Homeসর্বশেষ সংবাদদেবীগঞ্জে নাতীন জামাইয়ের সহযোগিতায়, শাশুড়ীর শ্বাসনালী কেটে হত্যা করলেন জামাই

দেবীগঞ্জে নাতীন জামাইয়ের সহযোগিতায়, শাশুড়ীর শ্বাসনালী কেটে হত্যা করলেন জামাই

সাইদুজ্জামান রেজা,পঞ্চগড়।।
প্রথমে ঘুমন্ত অবস্থায় শাশুড়ি চিন্তা ঋষির গলার শ্বাসনালি কেটে দেয় মুকুল চন্দ্র রায়। গলা হতে অঝোরে রক্ত বের হওয়াসহ গোংরাতে থাকে এবং মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকলে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য ধারালো ছোৱা দ্বারা আবারো বুকে ও পেটে একাধিক কোপ মারে।
আঘাতের ফলে চিন্তা ঋষি ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়।খুনি ঘটনা অন্য দিকে প্রবাহিত করার জন্য লাশ পূজার ঘর হতে টেনে হিচরে বের করে বসতবাড়ীর ভিতরে পরিত্যক্ত রিং স্লাপের পাশে নিয়ে আসে।এ সময় ভিকটিমের নাতনি জামাই মহাদেব ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তার সহযোগীতায় রিং স্লাপ কূপের ৪ ফুট নিচে ফেলে দিয়ে মাটি চাপা দেয়। মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য দেন পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা।
তিনি বলেন, আসামী মুকুল চন্দ্র রায় এর বর্ণনামতে হত্যার কাজে ব্যবহৃত একটি ধারালো ছোরা, মাটি বহনের কাজে ব্যবহৃত একটি প্লাষ্টিকের বালতিসহ ভিকটিমের নাতনী জামাই মহাদের ঋষিকে গ্রেফতার করা হয়। ভিকটিমের জামাই মুকুল চন্দ্র রায় (৩৬) নীলফামারী জেলার জলঢাকা এলাকার বালাগ্রামের মৃত খগেশ্বরের ছেলে ও নাতনি জামাই মহাদেব ঋষি (২৫) নীলফমারি, ডিমলা এলাকার উত্তর সোনাখুলি গ্রামের দেবদাস দধির ছেলে।
পুলিশ সুপার আরো জানান,আসামী মুকুল চন্দ্র রায় এর সাথে চিন্তা ঋষির মেয়ে রেনুর প্রায় ৬-৭ বছর পূর্বে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর রেনু ঋষি জানতে পারেন যে, মুকুল চন্দ্র রায়ের পূর্বের আরেকজন স্ত্রী আছে এবং রেনু মুকুল চন্দ্র রায়কে তালাক দেয়।  একপর্যায়ে রেনু গাজীপুর এলাকায় কাজের জন্য যায় এবং সেখানে আল আমিন নামের একজনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে।
এছাড়াও কিছুদিন পূর্বে রেনু ঋষি তার প্রেমিক আল আমিনকে সঙ্গে নিয়ে গাজীপুর হতে দেবীগঞ্জে চিন্তা ঋষির বাড়ীতে এসে কিছুদিন সেখানে অবস্থান করে। ঘটনার বিষয়টি মুকুল চন্দ্র রায় জানতে পেরে রেনু ঋষি ও আল আমিনকে হাতেনাতে ধরার জন্য ভিকটিম চিন্তা ঋষির বাড়ীতে এলে ভিকটিম চিন্তা ঋষি আল আমিন ও রেনু ঋষিকে গোপনে গাজীপুরে পাঠিয়ে দেয়। রেনু ঋষি ও আল আমিনের একসঙ্গে থাকা ও তাদেরকে গোপনে ভাগিয়ে দেওয়ার বিষয়ে মুকুল চন্দ্র রায় তার শাশুড়ী চিন্তা ঋষিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে চিন্তা ঋষি তার সাথে খারাপ আচরণ করে এবং সে তার মেয়ের কার্যকলাপের প্রতি সমর্থন করে।
রেনু ঋষির এমন কার্যক্রম মুকুল চন্দ্র রায় কোনভাবেই মেনে নিতে না পেরে সে গাজীপুরে রেনু ঋষির কাছে যায় এবং সেখানে আল আমিন ও রেনু ঋষির সাথে বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে মুকুল চন্দ্র রায় রেনু ঋষিকে হুমকি দিয়ে বলে যে, আমি তোকে, আল আমিনকে এবং তোর মা কে খুন করে ফেলব।হুমকি ধামকি দিয়ে মুকুল নিজবাড়ীতে চলে আসে। তার পরিকল্পনা মাফিক গত ৩১ অক্টোবর সকালে চিন্তা ঋষির বাড়ীতে আসে। দুপুর বেলায় চিন্তা ঋষির হাতে ২০০ টাকা দিয়ে বাজার হতে মুরগী কিনে আনতে বলেন। চিন্তা ঋষি মুরগী কিনে আনে এবং মুকুল চন্দ্র রায় নিজ হাতে রান্না করে ভিকটিম চিন্তা ঋষিসহ দুপুরে ও রাতে খাওয়া দাওয়া করে। রাতে মুকুল চন্দ্র রায় পূর্ব দিকের ঘরের বিছানায় এবং চিন্তা ঋষি পূজা করার ঘরের বিছানায় শুয়ে পড়েন। রাত ১২টা হতে ১টার মধ্যে ঘটনাটি ঘটে।
গত সোমবার দুপুরে দেবীগঞ্জ উপজেলার মধ্যেপাড়া থেকে চিন্তা ঋষি (৬৬) নামের ওই বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।এ ঘটনায় কয়েকজন কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয়া হয়। পুলিশ বিভিন্নভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেড়িয়ে আসে খুনের এ রহস্য।
ঘটনার প্রেক্ষিতে দেবীগঞ্জ থানায় আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর