বিএনপির ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশে রাজধানীতে সহিংসতা ও পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল হত্যা মামলার প্রধান আসামি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক আমানুল্লাহ আমানকে গ্রেফতার করেছে সিটিটিসি। সংস্থাটির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ২৮ অক্টোবরের বিএনপির সমাবেশে পুলিশ হত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেফতার সংক্রান্ত বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন মো. আসাদুজ্জামান।
এসময় তিনি দাবি করেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমানুল্লাহ আমানের নেতৃত্বেই পুলিশ কনস্টেবল আমিরুলকে হত্যা করা হয়েছে। সেই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, আগে থেকেই বিএনপির উচ্চ পর্যায় থেকে পুলিশের ওপর হামলার নির্দেশনা ছিল। আর এ কাজে দায়িত্ব দেয়া হয় ছাত্রদলের ওপর। কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনা পেয়েই আমানের নেতৃত্বে ছাত্রদলের বড় একটি গ্রুপ কালভার্ট রোডে যায়। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে সুযোগ বুঝে তারা পুলিশ কনস্টেবল আমিরুলের ওপর হামলা করে হত্যা করে।
২৮ অক্টোবর বিকেল রাজধানীর ফকিরাপুল চার রাস্তার মোড়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলার শিকার হয়ে পুলিশের কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ নিহত হয়েছেন। টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার দপ্তিয়র ইউনিয়নের ফয়েজপুর গ্রামের সেকান্দর মন্ডলের ছেলে তিনি। ওইদিন বিকেল ৪টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সোয়া ৪টায় মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে পুলিশ কনস্টেবল মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম পারভেজকে হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী পৌর যুবদলের আহ্বায়ক শামীম রেজা, ডেমরা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে সুলতান নামে বিএনপির এক কর্মীকে এবং পটুয়াখালীর গলাচিপা থেকে আপন আহমেদ নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে শামীম ও সুলতানকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
সরকার পতনের এক দফা দাবিতে ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ ছিল বিএনপির। কিন্তু সমাবেশ শুরুর আগেই দুপুরে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয় এবং পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। সংঘর্ষে একজন পুলিশ সদস্য ও এক রাজনৈতিক কর্মী নিহত হয়েছেন।
এ ছাড়া ৪১ জন পুলিশ সদস্য ও ২৮ জন সাংবাদিকসহ আরও অনেকে আহত হয়েছেন। বেশ কয়েকটি পুলিশ বক্স পোড়ানোর পাশাপাশি প্রধান বিচারপতির বাসভবনেও হামলা চালানো হয়।
এসব ঘটনায় মির্জা আব্বাসসহ ৪৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৭০০- ৮০০ জনকে আসামি করে রাজধানীর শাহজাহানপুর থানায় মামলা করেছে পুলিশ।