বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলে দাম বাড়ানোর লক্ষ্যে বিশ্বের বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল রফতানিকারক দেশ সৌদি আরব তেলের উৎপাদন কমিয়ে দেয়ায় উল্টো নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশটির অর্থনীতিতে।
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানিয়েছে, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর জন্য উৎপাদন কমিয়েছিল সৌদি আরব। এতে উল্টো ধাক্কা খেয়েছে দেশটির অর্থনীতি।
চলতি সপ্তাহে সৌদির সরকারি পরিসংখ্যান সংস্থা জানিয়েছে,
দেশটির মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ২০২৩ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে। ২০২০ সালে করোনাভাইরাস মহামারির পর এটিই দেশটির অর্থনীতির সবচেয়ে বড় সংকোচন।
তবে সৌদি আরবের জ্বালানি তেলবহির্ভূত কার্যক্রমে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হওয়ায় দেশটির অর্থনৈতিক মন্দা কিছুটা হলেও সামাল দেয় গেছে।
বিগত কয়েক মাস ধরেই সৌদির বিশাল জ্বালানি খাত সংকুচিত হচ্ছিল। তা সত্ত্বেও সামগ্রিক অর্থনীতি বছর ব্যবধানে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ১ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখে।
বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে এসে রাজ্যের জ্বালানি খাত ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। যা ২০১১ সালের পর কোনো প্রান্তিকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এর পেছনে মূল কারণ হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়ানোর জন্য তাদের তেল উৎপাদন কমিয়ে আনা।
উল্লেখ্য, বিশ্বের শীর্ষ তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো ‘দ্য অরগানাইজেশন অব দ্য পেট্রোলিয়াম কান্ট্রিস’ যা ওপেক নামে পরিচিত। আবার ওপেকের বাইরে অন্যান্য তেল উৎপাদনকারী দেশ ও ওপেকের সদস্যদের একত্রে ওপেক প্লাস নামে অভিহিত করা হয়।
এই ওপেক প্লাস জোটের শক্তিশালী সদস্য হিসেবে জুলাই মাসে সৌদি আরব দৈনিক ৯ মিলিয়ন ব্যারেল তেলের উৎপাদন করে। পরে সেপ্টেম্বরে ওপেকের সদস্য সৌদি আরব ও রাশিয়া জানিয়েছিল, চলতি বছরের শেষ নাগাদ সম্মিলিতভাবে দৈনিক ১ দশমিক ৩ মিলিয়ন ব্যারেল তেল উত্তোলন কমানো হবে।
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) প্রকাশিত এক নোটে অক্সফোর্ড ইকোনমিকস অ্যানালিস্ট জানিয়েছে,
এই বছরের শেষ নাগাদ তেলের উৎপাদন কম থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সৌদি অর্থনীতির জিডিপি ২০২৩ সালের মাত্র শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ বাড়বে। যা গত বছরের ৮ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে কম।
এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল মার্কেট ইন্টেলিজেন্সের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার অর্থনীতির পরিচালক রাইফ ওয়েগার্টের মতে, বিশ্বের জ্বালানি তেলের বাজার স্থিতিশীল করার লক্ষ্যে সৌদি আরব তেল উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।