বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সবশেষ জনশক্তি প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের সাক্ষরতার হার ৭৭ দশমিক ৭ শতাংশ।
সম্প্রতি বিবিএস ২০২২ সালকে ভিত্তি ধরে জনশক্তি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৫ বছরের মধ্যে এবং তার ওপরে যাদের বয়স তাদের সাক্ষরতার হার ৭৭ দশমিক ৭ শতাংশ।
গ্রামের তুলনায় শহরাঞ্চলে এ সাক্ষরতার হার ১০ শতাংশ বেশি। শহরাঞ্চলে ৮৪ দশমিক ৮ শতাংশ সাক্ষরতার হারের বিপরীতে গ্রামঞ্চলের সাক্ষরতার হার ৭৪ দশমিক ৬ শতাংশ।
এছাড়া নতুন এ প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দেশে পুরুষের তুলনায় নারী সাক্ষরতার হার প্রায় ৪ শতাংশ কম। বর্তমানে পুরুষ সাক্ষরতা ৭৯ দশমিক ৫ শতাংশের বিপরীতে নারী সাক্ষরতার হার ৭৫ দশমিক ৮ শতাংশ।
তবে ১৫ থেকে ২৯ বয়সি যুব নারী-পুরুষের মধ্যে সাক্ষরতার হারের ব্যবধান যৎসামান্য। এ বয়সি পুরুষদের সাক্ষরতার হার ৯৫ শতাংশ এবং নারীদের ৯৫ দশমিক ৯ শতাংশ। যুব সাক্ষরতার হার শহরাঞ্চলে ৯৬ দশমিক ২ শতাংশ, যার মধ্যে নারী ৯৬ দশমিক ৭ শতাংশ ও পুরুষ সাক্ষরতা ৯৫ দশমিক ৭ শতাংশ। গ্রামঞ্চলে যুব সাক্ষরতার হার পুরুষদের ক্ষেত্রে ৯৪ দশমিক ৮ শতাংশ এবং নারীদের ৯৫ দশমিক ৫ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মোট কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর ১২ দশমিক ৪৩ শতাংশ বর্তমানে বিদ্যালয়ে যায়, ৬৬ দশমিক ২ শতাংশ বিদ্যালয়ের শিক্ষা সম্পন্ন করেছে এবং ২১ দশমিক ৩৫ শতাংশ কোনোদিনও বিদ্যালয়ে যায়নি।
দেশের মোট জনসংখ্যার ১৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ পুরুষ বর্তমানে বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন। এর বিপরীতে নারী শিক্ষার্থীর হার ১১ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। অন্যদিকে দেশের ১৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ পুরুষ কোনোদিনও বিদ্যালয়ে যায়নি। নারীদের ক্ষেত্রে এ হার ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ।
দেশের মোট কর্মক্ষম জনসংখ্যার ৩১ দশমিক ৫৬ শতাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ৭ দশমিক ৭৯ শতাংশ স্নাতক সম্পন্ন করেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিবিএসের জরিপে দেখা গেছে, দক্ষতা বিকাশে দেশের কর্মক্ষম শিক্ষিত জনগণের সিংহভাগ কোনো রকমের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণে অংশ নেয়নি। বিগত এক বছরে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠির মাত্র ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ জনগণ বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছে। বাকি ৯৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ গত ১২ মাসে কোনো ধরনের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণে অংশ নেয়নি।
যারা বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন তাদের বেশিরভাগই ১ থেকে ৩ মাসের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, যার হার ২৯ দশমিক ১১ শতাংশ। এছাড়া ৪ থেকে ৬ মাস মেয়াদী প্রশিক্ষণ নিয়েছে ২২ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং ৬ মাসের অধিক প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন ১৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ কর্মক্ষম জনগণ।
বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নেয়া হয়েছে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, যা ৩২ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এর বাইরে তৈরি পোশাকে ১৫ দশমিক ৭১ শতাংশ, ড্রাইভিং ও মোটর মেকানিকে ৭ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং স্বাস্থ্য ও প্যারামেডিকেলে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ কর্মক্ষম জনগণ অংশ নিয়েছেন।
এসব বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের বেশিরভাগই নেয়া হয়েছে বেসরকারি সংস্থা থেকে। বেসরকারি সংস্থায় এ হার ৪৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ। অন্যদিকে সরকারি প্রশিক্ষণের হার ৩২ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং এনজিও থেকে দেয়া হয়েছে ৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ প্রশিক্ষণ।