দুই দশকের পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ারে প্রথমবার ক্লাব ফুটবল থেকে লম্বা ছুটিতে যাচ্ছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। মূলত এমএলএস (মেজার লিগ সকার) কাপের প্লে অফে জায়গা করে নিতে না পারায় তার দল ইন্টার মায়ামিকে আগামী চার মাস বিশ্রামে থাকতে হচ্ছে।
বার্সেলোনা একাডেমিতে যোগ দেয়ার পর থেকে ফুটবল থেকে খুব বেশি বিশ্রাম মেলেনি মেসির। ২০০৩ সাল থেকে তিনি বার্সেলোনা, পিএসজি ও সবশেষ ইন্টার মায়ামির হয়ে ক্লাব পর্যায়ে খেলেছেন ৮৯৯ ম্যাচ। এ তালিকায় অবশ্য নেই মৌসুম পূর্ববর্তী ক্লাব প্রীতি ম্যাচ। একই সময় জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন ২০১ ম্যাচ। ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে গড়ে তিনি বছরে ম্যাচ খেলেছেন ৫৫টি। সপ্তাহের হিসেবে এক ম্যাচের বেশি।
কিন্তু আগামী চার মাসে তিনি খেলবেন সবমিলিয়ে মাত্র চার ম্যাচ। আগামী নভেম্বরে চীনে দুটি ক্লাব প্রীতি ম্যাচ আর বাকি দুটি আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ। কিন্তু এ সময় এমএলএস লিগে থাকছে না মায়ামির কোনো ম্যাচ। মূলত লিগের প্লে অফে জায়গা করে নিতে ব্যর্থ হওয়ায় এমএলএস লিগ থেকে চার মাসের বিশ্রামে চলে গেছে মায়ামি।
সাধারণত ফেব্রুয়ারির শেষদিকে শুরু হয় এমএলএস এর মৌসুম। লিগের প্রথম ধাপ শেষ হয় অক্টোবরের দিকে। এবারের এমএলএস লিগে ছিল মোট ২৯ দল। এরমধ্যে ২৬টি যুক্তরাষ্ট্রের, বাকি তিনটি কানাডার। ভৌগোলিক অবস্থানের দিক দিয়ে দুটি কনফারেন্সে ভাগ করা। ইস্টার্ন কনফারেন্সে ১৫ ক্লাবের একটি মেসির ক্লাব ইন্টার মায়ামির। বাকি ১৪ ক্লাব ওয়েস্টার্ন কনফারেন্সে।
প্রথম ধাপে প্রতিটি ক্লাব মোট ৩৪ করে ম্যাচ খেলে। একেকটি দল নিজেদের কনফারেন্সে দলগুলোর বিপক্ষে হোম অ্যাওয়েতে দুবার করে মুখোমুখি হবে। বাকি ম্যাচ তারা খেলে অন্য কনফারেন্সের দলের বিপক্ষে।
৩৪ ম্যাচ হওয়ার পর দুই কনফারেন্সের পয়েন্ট টেবিলের সেরা ৭টি দল সরাসরি যায় ফাইনাল সিরিজে। ফাইনাল সিরিজে পয়েন্ট তালিকা অনুযায়ী সেরা দলকে দেয়া হয় সাপোটার্স শিল্ড। প্রতি কনফারেন্সের আট ও নয় নম্বরে থাকা দল অর্থাৎ মোট চার ক্লাব খেলে ফাইনাল সিরিজের প্লে-অফ। এই পুরো রাউন্ডকে বলা হয় এমএলএস কাপ প্লে-অফ। প্লে-অফে ম্যাচ মোট ২৪টি। রাউন্ড ১৬, কোয়ার্টার, সেমিফাইনাল ও ফাইনাল। ফাইনালের জয়ী দল হবে এমএলএস চ্যাম্পিয়ন।
লিগের প্রথম ধাপে ইস্টার্ন কনফারেন্সের পয়েন্ট তালিকায় ১৪’তে থেকে লিগ শেষ করায় ফাইনাল সিরিজের প্লে অফেও জায়গা হয়নি মায়ামির। অবশ্য এরপরও সুযোগ ছিল মেসিদের সামনে। ইউএস ওপেন কাপ জিততে পারলে তারা পেয়ে যেত প্লে অফের টিকিট। কিন্তু গত ২৮ সেপ্টেম্বর ডায়নামোর কাছে ফাইনাল হেরে সে সুযোগও হারায় মায়ামি। যার কারণে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নতুন মৌসুম শুরুর আগে এমএলএসে আর কোনো ম্যাচ পাচ্ছে না মেসিরা।
ফলে দুই দশকের ব্যস্ত ফুটবল ক্যারিয়ারের পর পরিবার নিয়ে সময় কাটানোর জন্য লম্বা সময়ের বিশ্রাম পাচ্ছেন ৩৬ বছর বয়সী মেসি। এ নিয়ে আর্জেন্টাইন তারকা বলেন, ‘দীর্ঘ সময় পর প্রথমবার ডিসেম্বরে আমার প্রিয়জনদের সঙ্গে শান্তিতে ছুটি কাটাতে পারব।’