ইসরাইল ও হামাসের চলমান যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন সবচেয়ে কম বয়সী হিসেবে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই।
সংবাদমাধ্যম আল-আরাবিয়া জানায়, গাজায় হামাসের সঙ্গে যুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ‘নির্বিচারে’ হামলা না চালানোর জন্য ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মালালা। লড়াইয়ে এক হাজারেরও বেশি লোকের মৃত্যু ও দুই লাখ লোকের বাস্তুচ্যুত হওয়ার নিন্দা জানিয়েছেন সারা বিশ্বের রাজনীতিবিদ, সামাজিক নেতারা।
জানা যায়, ফিলিস্তিনিদের ওপর বহু বছর ধরে নৃশংসতার পর, হামাস ইসরাইলের ওপর ৭ অক্টোবর সমুদ্র, স্থল ও আকাশ থেকে আকস্মিক হামলা চালায়। যার ফলে বহু মানুষ মারা যায়। এ হামলার পর, ইসরাইলও গাজায় বিমান হামলার প্রতিশোধ নিয়েছে। যার ফলে প্রায় ৭০০ জন নিহত ২০০০ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছেন।
এদিকে ইসরাইল ও গাজায় এখনও যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে, গাজার শিশু ও নারীসহ বেসামরিক মানুষ আতঙ্কে ভুগছে, হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। মালালা ইউসুফজাই ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির পক্ষে তার সমর্থন ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমি সম্প্রতি যে হৃদয়বিদারক খবর দেখেছি, ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের শিশুদের জন্য আমার মন কাঁদে। তাদের তো কোনো দোষ নেই। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তারা।’
তার শৈশবের দিনগুলোর কথা উল্লেখ করে মালালা ইউসুফজাই লেখেন, ‘ যখন আমার বয়স মাত্র ১১ বছর, তখন আমি আমার চারপাশে সন্ত্রাস ও সহিংসতার মতো পরিবেশ দেখেছিলাম। আমরা ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠতাম মর্টার শেলের শব্দে। দেখতাম আমাদের স্কুল-মসজিদ বোমায় ধ্বংস হয়ে গেছে। সুখ-শান্তি কেবলই স্বপ্ন ছিল আমাদের কাছে।’
এ নোবেলজয়ী আরও লেখেন, ‘যুদ্ধ সবসময়ই শিশুদের প্রভাবিত করে। সেই শিশুরা হোক ইসরাইলের বা বিমান হামলার ভয়ে গাজায় বাড়ির পেছনে লুকিয়ে থাকা ফিলিস্তিনি শিশু। তারা আজ সত্যিই চরম অসহায়, খাবার ও পানির সংকটে জীবন অতিষ্ঠ। আজ আমি সেসব শিশু ও মানুষের জন্য দুঃখিত, যারা পবিত্র ভূমিতে শান্তি ও ন্যায়বিচার চায়।’
১৯৯৭ সালের ১২ জুলাই পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকায় মালালা ইউসুফজাইয়ের জন্ম। নারীশিক্ষা নিয়ে মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার পক্ষে বিবিসি ব্লগে লেখালেখি করে তিনি পশ্চিমা বিশ্বের নজর কাড়েন। তখন তার বয়স মাত্র ১১ বছর। নারীশিক্ষার পক্ষে কথা বলায় ২০১২ সালের ৯ অক্টোবর সোয়াত উপত্যকার মিনগোরাত এলাকায় ১৪ বছর বয়সী মালালা ও তার দুই বান্ধবীকে স্কুলের সামনেই গুলি করা হয়।
২০১৪ সালে সবচেয়ে কম বয়সী হিসেবে মালালা শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। সম্প্রতি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতির ওপর স্নাতক (গ্র্যাজুয়েট) ডিগ্রি অর্জন করেন।