Homeআন্তর্জাতিকঐতিহাসিক সফরে ফিলিস্তিনে সৌদি রাষ্ট্রদূত

ঐতিহাসিক সফরে ফিলিস্তিনে সৌদি রাষ্ট্রদূত

তিন দশক পর ঐতিহাসিক সফরে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত নায়েফ আল-সুদাইরি। ইসরাইলের সঙ্গে সৌদির সম্পর্ক স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে দুই দিনের এ সফর বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। তবে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের সমস্যা সমাধানের বিষয় বড় অগ্রগতি হলে তবেই তেল আবিবের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে বলে জানায় রিয়াদ।

গত মাসে ফিলিস্তিনে প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি ঘোষণা করে সৌদি আরব। তাদের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় ফিলিস্তিন সরকার। ফিলিস্তিন সংকট সমাধান ও রিয়াদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে এই পদক্ষেপ কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

রাষ্ট্রদূত নিয়োগের ঘোষণার প্রায় এক মাস পর মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুইদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ফিলিস্তিনের রামাল্লায় পৌঁছান সৌদি আরবের নব নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত নায়েফ আল-সুদাইরি ও তার প্রতিনিধি দল। এর মধ্যদিয়ে তিন দশক পর সৌদি কর্মকর্তাদের ইসরাইলের অধিকৃত পশ্চিম তীরের মাটিতে পা পড়লো।

এদিন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ও শীর্ষ কূটনীতিকদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন তিনি। ইসরাইলের সঙ্গে সৌদির সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্যই মূলত এ সফর। এ বিষয়ে সৌদি সরকার জানায়, ফিলিস্তিন ভূখন্ডের সমস্যা সমাধানের বিষয় বড় অগ্রগতি হলে তেল আবিবের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে রিয়াদ।

ফিলিস্তিনে অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত আল-সুদাইরির এই গুরুত্বপূর্ণ সফর ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত হিসেবে তার নিয়োগের বিষয়টির প্রশংসা করে প্রেসিডেন্ট আব্বাস বলেন, ‘এই পদক্ষেপটি দুই দেশ ও দুই বন্ধুপ্রতিম জনগণের মধ্যে শক্তিশালী ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে অবদান রাখবে।’

বৈঠকের পর সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের কাছে দুই পবিত্র মসজিদের হেফাজতকারী বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ ও ক্রাউন প্রিন্স যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের শুভেচ্ছা পৌছোতে পেরে ও পরিচয়পত্র পেশ করতে পেরে আমি সম্মানিত বোধ করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সৌদি আরব ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ওপর জোর দিয়েছি এবং মহান আল্লাহ ইচ্ছায় এই সফরের মধ্যদিয়ে সব ক্ষেত্রে সম্পর্ক আরও জোরদার করার সূচনা হবে।’

এদিকে ইসরাইল-সৌদি আরব সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে দুপক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করেছেন জো বাইডেন প্রশাসন।

মার্কিন চাপের মুখে এ বিষয়ে অনেকটা এগিয়ে গেছে দু’পক্ষ, এমন গুঞ্জনও রয়েছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। এমন পরিস্থিতিতে সৌদি আরবের এ সফর ভূ-রাজনীতির মোড় কোন দিকে ঘোরাবে তা নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।

২০২০ সালে আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে আরব বিশ্বের চার দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মরক্কো ও সুদান। এতদিন সে পথে না হাঁটলেও সম্প্রতি মার্কিন চাপের মুখে এ বিষয়ে অনেকদূর এগিয়ে গেছে রিয়াদ।

গত সপ্তাহে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান জানান, তেল আবিবের সঙ্গে ধীরে ধীরে তারা দূরত্ব কমিয়ে আনছে। অন্যদিকে সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করা গেলে তা মধ্যপ্রাচ্যে গেম-চেঞ্জার হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করছে তেল আবিব ও ওয়াশিংটন।

২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ইসরাইল-সৌদি সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে পারলে, তা জো বাইডেনের জন্য বড় কূটনৈতিক বিজয় হবে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।

সর্বশেষ খবর