চীনের আবাসন খাতে এত বেশি খালি ভবন রয়েছে যে, সেগুলো দেশটির বিদ্যমান জনসংখ্যা কোনোভাবেই পূরণ করতে পারবে না। বিদ্যমান খালি ভবনগুলো পূরণ করতে কমবেশি প্রায় ৩০০ কোটি জনসংখ্যা প্রয়োজন।
শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর এক সাবেক কর্মকর্তার বরাতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাতে জানা যায়, চীনের আবাসন খাতে একপ্রকার বিস্ফোরণই ঘটেছে। দেশটিতে বর্তমানে ৭০ লাখ নতুন ভবন খালি পড়ে আছে। মূলত গত শতকের ৯০-এর দশক থেকে শুরু করে করোনা মহামারির আগ পর্যন্ত দেশটির আবাসন খাতে কয়েক শ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু চাহিদার বিপরীতে জোগান বেশি হওয়ায় খাতটি বর্তমানে বেশ সংকটের মধ্যে রয়েছে।
চীনের আবাসন খাত ২০২১ সালের আগ পর্যন্তও দেশটির প্রবৃদ্ধির অন্যতম পিলার ছিল। তবে, আবাসন খাতের অন্যতম বৃহৎ বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান এভারগ্র্যান্ডে গ্রুপ সংকটের কারণে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করলে সংকট সামনে আসে। এ বিষয়ে সরকার কোনো মন্তব্য করেনি এখনও। এই প্রথম কোনো সাবেক কর্মকর্তা বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন।
চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর দেয়া তথ্য বলছে, সারা দেশে আবাসন খাতে প্রায় ৬৫ কোটি বর্গমিটার খালি ভবন পড়ে রয়েছে। এ ছাড়া বার্তা সংস্থা রয়টার্সের হিসাব বলছে, সব মিলিয়ে ৭২ লাখ খালি ভবন রয়েছে চীনজুড়ে।
এসব ভবনের প্রতিটি বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্টের আয়তন গড়ে ৯৭০ বর্গফুট। তবে, সেসব আবাসিক ভবনকে ধরা হয়নি, যেগুলো এরই মধ্যে ক্রেতারা অগ্রিম টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছেন, কিন্তু নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিক সংকটের কারণে নির্মাণ করতে পারেনি।
চীনের পরিসংখ্যান ব্যুরোর সাবেক উপপ্রধান হে কেং (৮১) বলেন,
এখন কয়টি বাড়ি খালি পড়ে আছে আপনি অনুমান করতে পারেন? প্রত্যেক বিশেষজ্ঞই আলাদা আলাদা সংখ্যা বলছেন। তবে অনেকেই বিশ্বাস করেন বর্তমানে যে পরিমাণ খালি বাড়ি পড়ে আছে সেগুলোতে অন্তত ৩০০ কোটি মানুষ থাকতে পারবেন।
চায়না নিউজ সার্ভিসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ডংগুয়ানে এক ফোরামে হে কেং এ কথা বলেন।
ফোরামে তিনি আরও বলেন, এই অনুমান হয়তো খানিকটা বেশি হতে পারে, তবে এটি নিশ্চিত যে, দেশের ১৪০ কোটির বেশি মানুষ এই খালি ভবনগুলো কোনোভাবেই পূরণ করতে পারবে না।