Homeখেলামাদারীপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও কৃষকের ফুটবল খেলায় হাজারো দর্শক

মাদারীপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও কৃষকের ফুটবল খেলায় হাজারো দর্শক

মাদারীপুরের রাজৈরে হয়ে গেলো মুক্তিযোদ্ধা ও ষাটোর্দ্ধো কৃষককের নিয়ে ফুটবল টুর্নামেন্ট। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ব্যতিক্রমী এই আয়োজন দেখতে শাখারপাড় হাইস্কুল মাঠে ভীড় করেন ফুটবলপ্রেমীরা। খেলা দেখে আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠেন শিশু-কিশোরসহ নানা বয়সী মানুষ। এলাকাবাসীকে বিনোদন দিতেই এই আয়োজন বলে জানান আয়োজকরা।

খেলার মাঠ ঘুরে দেখা যায়, কারো বয়স ৬০, কারো ৬৫, আবার কারো বয়স ৭০। এই বয়সে মাঠে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কৃষক ও মুক্তিযোদ্ধারা। ব্যতিক্রমী এই আয়োজন করা হয় মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার শাখারপাড় হাইস্কুল মাঠে। খেলা দেখতে মাঠে ভীড় করে শিশু-কিশোরসহ নানা বসয়ী মানুষ। ৪০ মিনিটের খেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হারিয়ে ৩-১ গোলে বিজয়ী হয় কৃষকরা। বৃদ্ধ বয়সে খেলায় অংশ নিতে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা দুটি দলের সদ্যরাও। শাখারপাড় প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংস্থার আয়োজনে এই খেলা দেখে আনন্দিত ফুটবলপ্রেমীরা। এলাকাবাসীকে আনন্দ দিতে এমন খেলার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান আয়োজক। মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে খেলাধুলার কোন বিকল্প নেই, তাই এমন খেলার আয়োজনে পাশে থাকার কথা জানায় উপজেলা প্রশাসন।

জানা যায়, খেলায় অংশ নেয়া দুটি দলকে পরিবেশবান্ধব গাছ পুরষ্কার হিসেবে তুলে দেয় আগত অতিথিরা। বয়সের বাঁধা করেছে জয়, এই বয়সে খেলতে নাকি ভয়। এই প্রতিপাদ্যকে হার মানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা ও ষাটোর্দ্ধো কৃষকরা। তাদের এই খেলা দীর্ঘদিন স্মরনীয় হয়ে থাকবে, এমটানই বলছেন ফুটবলপ্রেমী, আয়োজক ও এলাকাবাসী।

কলেজপড়া স্বর্ণা আক্তার বলেন, ‘এতো সুন্দর আয়োজন সবাইকে মুগ্ধ করেছে। কৃষক আর মুক্তিযোদ্ধা, যারা সর্বত্র দেশের সম্মান রক্ষার কারিগর। তাদের খেলা দেখে আনন্দ উপভোগ করেছি।’ দিদারুল আলম জুয়েল নামে এক দর্শক বলেন, ‘আমি মাদারীপুরের মোস্তফাপুর থেকে এসেছি খেলা দেখতে। এসে সব বয়সের মানুষের সাথে আনন্দ আত্মহারা হয়েছি। প্রতিটি এলাকায় এমন ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজনের দাবি জানাচ্ছি।’

৭০ বছরের কৃষক আলী মল্লিক বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে একত্রে ফুটবল খেলেছি, মজা যেমন পেয়েছি, ঠিক তেমনি আনন্দও করেছি। দর্শকদের হৈচৈ আরও মজা দিয়েছে। মাঝে মাঝে আমরা এমন খেলাধুলা করতে চাই।’ বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের আকন বলেন, ‘শেষ বয়সে এসে মাঠে খেলতে পেরেছি এটাও ভাগ্যের ব্যাপার। খেলা জয়-পরাজয় থাকবেই, এলাকাবাসী ও দর্শকদের আনন্দ দিতে পেরেছি, এটাই মুগ্ধ ও খুশি।’

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপমা ফারিসা বলেন, ‘প্রতিটি খেলায় মানুষকে খারাপ কাজ থেকে দূরে রাখে। শাখারপাড় এতো সুন্দর আয়োজন, সবাইকে আনন্দিত করেছে, আমরা সবাই একত্রে টুর্মামেন্টটি উপভোগ করেছি।’

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা পরিষদের চেয়ার‌্যমান রেজাউল করিম শাহীন চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিটি ইউনিয়নে প্রতিনিয়ত এমন খেলাধুলার আয়োজন করা হলে উপজেলা পরিষদ থেকে সবধরনের সহযোগিতা করা হবে। খেলার কোন বয়স নাই, তাই যেকোন বয়সে সাহস নিয়ে মাঠে খেলাধুলা করা উচিৎ। তাই, উপজেলা পরিষদ এমন খেলাকে সর্বত্র সাধুবাদ জানায়।’

Exit mobile version