চলমান উত্তেজনার মধ্যে কানাডায় আরেক শিখ নেতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) অজ্ঞাত বন্দুকধারীর হামলায় সুখদুল সিং নামে খালিস্তানপন্থি ওই নেতা নিহত হন। ফেসবুকে এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন ভারতের গুজরাটে আহমেদাবাদের জেলে বন্দি গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এই তথ্য জানিয়েছে।
ফেসবুক পোস্ট থেকে বিষ্ণোই গ্যাংয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়,
মাদকাসক্ত সুখদুল সিং ওরফে দুনেকেকে তার শাস্তি দেয়া হয়েছে। শত্রুরা ভারত বা বিশ্বের যেকোনো দেশে থাকলেও তারা রেহাই পাবে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খালিস্তানি ‘সন্ত্রাসী’ সুখদুল সিং নিজ দলের প্রতিপক্ষের সহিংসতায় নিহত হয়েছেন। তিনি ভারতের পাঞ্জাবের জেলা শহর মোগার ‘ক্যাটাগরি এ’ সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত ছিলেন, যিনি ২০১৭ সালে জাল পাসপোর্টে কানাডায় পালিয়ে যান।
খালিস্তানপন্থি নেতা অর্শদীপ দাল্লার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন সুখদুল সিং। এছাড়া বুধবার ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী সংস্থা এনআইএ খালিস্তান এবং কানাডার সঙ্গে সম্পৃক্ত ৪৩ জন ‘গ্যাংস্টারের’ যে তালিকা প্রকাশ করেছে, সেখানেও নাম রয়েছে সুখদুল সিংয়ের।
এদিকে বড় ধরনের কূটনৈতিক বিরোধের মধ্যেই এবার ভারতে কানাডার নাগরিকদের জন্য সব ভিসা পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছে। এমন পদক্ষেপের ফলে ভারত ও কানাডার মধ্যে চলমান বিরোধ আরও বাড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ‘প্রক্রিয়াগত কারণ’ দেখিয়ে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কানাডার নাগরিকদের সব ভিসা পরিষেবা স্থগিত করেছে ভারত সরকার।
ভিসা আবেদন পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান বিএলএস ইন্টারন্যাশনালের ওয়েবসাইটে দেয়া এক পোস্টেও বলা হয়েছে, প্রক্রিয়াগত কারণে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কানাডার নাগরিকদের জন্য ভারতীয় ভিসা পরিষেবা স্থগিত থাকবে।
চলতি বছরের জুনে কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার একটি শিখ মন্দিরের বাইরে অজ্ঞাতপরিচয় মুখোশধারীদের গুলিতে নিহত হন হারদীপ সিং নিজ্জার। ভারতে শিখদের আলাদা খালিস্তান রাষ্ট্রের দাবির আন্দোলনের অন্যতম বড় নেতা ছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক হারদীপ।
ওই হত্যাকাণ্ড নিয়ে সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) কানাডার পার্লামেন্টে বক্তব্য দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টি ট্রুডো। এ সময় ভারতের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় শিখ নেতাকে হত্যার অভিযোগ তোলেন তিনি। ট্রুডো জানান, কানাডার গোয়েন্দারা হারদ্বীপ হত্যাকাণ্ডে ভারত সরকারের সংশ্লিষ্টতার ‘বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ’ পেয়েছেন। একই সঙ্গে কানাডার ভেতর নিজ দেশের নাগরিকের হত্যার পেছনে বিদেশি কোনো সরকার জড়িত থাকলে তা সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত বলেও মন্তব্য করেন ট্রুডো।