ইস্টার্ণ ব্যাংক পিএলসি (ইবিএল) প্রাণ–আরএফএল গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হবিগঞ্জ অ্যাগ্রো লিমিটেডের একটি বাণিজ্যিক লেনদেন রুপিতে নিষ্পত্তি করেছে, যা দেশের ব্যাংকিং খাতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রুপিতে বাণিজ্যিক লেনদেন নিষ্পত্তির প্রথম ঘটনা।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টম্বর) ইবিএলের যোগাযোগ বিভাগের প্রধান জিয়াউল করিম সময় সংবাদকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, দেশের প্রথম কোনো ব্যাংক হিসেবে ভারতের সঙ্গে রুপিতে বাণিজ্যিক লেনদেন নিষ্পত্তি করছে ইবিএল। এই লেনদেনের পরিমাণ ২৪ লাখ রুপি।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির বরাত দিয়ে এক বিজ্ঞপ্তিতে ইবিএল জানিয়েছে, ‘ভারত বাংলাদেশের বিশ্বস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী। মার্কিন ডলারের পরিবর্তে অন্য কোনো দেশের সঙ্গে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পন্ন করল। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ যাত্রার শুরু।’
ইবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী আলী রেজা ইফতেখার বলেন, গত ১১ জুলাই বাণিজ্যিক লেনদেন নিষ্পত্তি প্রক্রিয়ায় ভারতীয় রুপি ব্যবহার কার্যক্রম চালু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ডলারের ওপর থেকে নির্ভরতা কমাতে ও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে গতি বাড়াতে চলতি বছরের জুলাইতে দেশের দুটি ব্যাংককে ভারতের সঙ্গে রুপিতে লেনেদেনের অনুমতি দেয়া হয়।
ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, লেনদেন নিষ্পত্তিতে নতুন এই ব্যবস্থা বাণিজ্যের ব্যয় কিছুটা হলেও কমবে। এতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়াবে।
ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের (আইবিসিসি) সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, বাংলাদেশ প্রতিবছর প্রায় ২০০ কোটি ডলারের পণ্য ভারতে রফতানি করে। আর ভারত থেকে ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করে। নতুন এ ব্যবস্থায় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়া বাণিজ্য লেনদেন নিষ্পত্তিতে বাংলাদেশি মুদ্রাকেও বিবেচনা করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি অনুরোধ জানান মাতলুব আহমাদ।
আর বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন চৌধুরী জানান, সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংককে রুপিতে বাণিজ্য নিষ্পত্তির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। শিগগিরই আরও অনেক ব্যাংক অনুমতি পাবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী, আইসিআইসিআই এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার প্রতিনিধি প্রমুখ।
এর আগে চলতি বছরের ১১ জুলাই ভারতের সঙ্গে রুপিতে বাণিজ্য চালু হয়। সে সময় সোনালী ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডকে (বর্তমানে ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসি) আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে ডলারের পরিবর্তে রুপিতে এলসি খোলার অনুমতি দিয়েছেল বাংলাদেশ ব্যাংক।