শিখ নেতা হারদ্বীপ সিং নিজ্জার হত্যাকাণ্ড নিয়ে দিল্লি-অটোয়ার মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই এবার নাগরিকদের ভারত ভ্রমণের ক্ষেত্রে ‘সতর্কতা’ দিয়েছে কানাডা।
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, দুই দেশের উত্তেজনার মধ্যে মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) নিজ দেশের নাগরিকদের ভারত ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে কানাডা।
সতর্কবার্তায় জম্মু ও কাশ্মীরের সংঘাতের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, ‘ওই এলাকাগুলোর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে নিরাপত্তা পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ। সেখানে সহিংস বিক্ষোভ, নাগরিক অস্থিরতা এবং সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে।’
বার্তায় বলা হয়েছে, ‘অনেক চরমপন্থি এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠী উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসাম এবং মণিপুরে সক্রিয় রয়েছে। তারা নিয়মিত স্থানীয় সরকার এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে ও তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনায় অর্থায়নের জন্য বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যকলাপ করতে পারে।’
এর আগেও কানাডার নাগরিকদের আসাম, মণিপুরসহ জম্মু ও কাশ্মীর এবং উত্তর-পূর্ব ভারত ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্ক করা হয়েছিল।
এই সতর্কতার সঙ্গে শিখ নেতা হত্যাকাণ্ড ইস্যুর সম্পৃক্ততা না থাকলেও, এমন সময়ে সতর্কতাটি দেয়া হয়েছে যখন ভারত ও কানাডার মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সম্প্রতি শিখ নেতা হারদ্বীপ সিং নিজ্জার হত্যাকাণ্ড ইস্যুতে প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে ভারত ও কানাডা। পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক বহিষ্কারের ঘটনার মধ্য দিয়ে দেশদুটির সম্পর্ক ঠেকেছে তলানিতে। এ ছাড়া আগে থেকে বাণিজ্যিক বিরোধ তো ছিলই।
চলতি বছরের জুনে কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার একটি শিখ মন্দিরের বাইরে অজ্ঞাতপরিচয় মুখোশধারীদের গুলিতে নিহত হন হারদ্বীপ সিং নিজ্জার। ভারতে শিখদের আলাদা খালিস্তান রাষ্ট্রের দাবির আন্দোলনের অন্যতম বড় নেতাও ছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক হারদ্বীপ।
ওই হত্যাকাণ্ড নিয়ে সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) কানাডার পার্লামেন্টে বক্তব্য দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টি ট্রুডো। এ সময় ভারতের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় শিখ নেতাকে হত্যার অভিযোগ তোলেন তিনি। ট্রুডো জানান, কানাডার গোয়েন্দারা হারদ্বীপ হত্যাকাণ্ডে ভারত সরকারের সংশ্লিষ্টতার ‘বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ’ পেয়েছেন। একই সঙ্গে কানাডার ভেতর নিজ দেশের নাগরিকের হত্যার পেছনে বিদেশি কোনো সরকার জড়িত থাকলে তা সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত বলেও মন্তব্য করেন ট্রুডো।
এর পরই অটোয়ায় নিযুক্ত ভারতের এক শীর্ষ কূটনীতিককে বহিষ্কার করে কানাডা সরকার। প্রথমে তার পরিচয় জানা না গেলেও পরে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়, যাকে বহিষ্কার করা হয়েছে, তিনি কানাডায় ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (র) প্রধান ছিলেন। এ ঘটনার কয়েক ঘণ্টা যেতে না যেতেই পাল্টা ব্যবস্থা নেয় নয়াদিল্লি। ভারতে নিযুক্ত কানাডার শীর্ষ এক কূটনীতিককে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে নয়াদিল্লি ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে মোদি সরকার।