শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি।।
বগুড়ার শেরপুরে একটি মন্দিরে ভাঙচুর, দানবাক্স, পূজার সরঞ্জামাদি লুটপাট ও দৈনন্দিন পূজায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত রোববার সন্ধ্যা সাতটায় উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বেলতা গ্রামে মালের পুকুরের পশ্চিম পাড়ে কালিমাতার মন্দিরে এই ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসীরা জানান, শতাব্দী প্রচীন এই কালিমাতার মন্দিরে নিয়মিত পূজা অর্চনা হয়ে আসছে। সিএস খতিয়ান অনুযায়ী এই মালের পুকুরের ২ দশমিক ২২ একর জমি রানী ভবানী এস্টেটের সম্পত্তি। এই পুকুর পাড়ের পশ্চিমে ১০ শতাংশ জমির উপরে এই মন্দির। তৎকালীন সিএস খতিয়ানে এই সম্পত্তি জনসাধারণের ব্যবহার্য্য সম্পত্তি হিসেবে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু স্থানীয় বেলতা গ্রামের নির্মল চন্দ্র সরকার ও তার জ্যাঠাতো ভাই পরিমল চন্দ্র সরকার এগুলো নিজেদের পৈতৃক সম্পত্তি দাবি করেন। পুকুরটি তারা ভোগদখল করছেন ও বিভিন্ন সময়ে মন্দিরটিকে উচ্ছেদের চেষ্টা করেন। এর ধারাবাহিকতায় রবিবার সন্ধ্যায় মন্দিরে ভাংচুর করা হয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী।
ওই মন্দির কমিটির সভাপতি ও পূজারী সঞ্জয় সরকার জানান গত রোববার সন্ধ্যা রাতে নির্মল ও পরিমলের নেতৃত্বে অন্তত ১০ জন মন্দির উচ্ছেদে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এসময় তারা মন্দিরের পূজা অর্চনার জন্য ফুলের বাগান, ভোগঘর, মহাদেবের আসন ভাঙচুর করে ও উপড়ে ফেলে। মন্দিরের আগত দর্শনার্থীদের কালিমাতা মন্দির উন্নয়নের দান বাক্স , মন্দিরের সামনে আটচালার ছয় বান্ডিল ঢেউটিন, টিউবওয়েলের মাথা ও পূজার থালা-বাসন তারা লুট করে নিয়ে গেছে। এতে মন্দিরের অন্তত ৫০ হাজার টাকার মালামাল লুটপাট করা হয়েছে। এসময় তিনি বাধা দিতে গিয়ে হামলাকারীদের হামলায় শিকার হয়েছেন। সোমবার তিনি পুনরায় মন্দিরে দৈনন্দিন পূজা অর্চনায় গেলে এই পূজাতেও পরিমল চন্দ্র সরকার তাকে বাধা দেয়।
এ নিয়ে পরিমল চন্দ্র সরকার বলেন, এই পুকুর ও পুকুরের পাড় তাদের পৈতৃক সম্পত্তি। কিন্তু তাদেরকে না জানিয়ে মন্দিরের উন্নয়ন করা হয়েছে। এজন্য রোববার সন্ধ্যার পর শুধু মন্দিরটি রেখে বাকি সবকিছু উচ্ছেদ করা হয়েছে। তিনি টিউবওয়েলের মাথা খুলে নেওয়া, ভোগঘর ভাংগা ফুলের গাছ কাটা ও মহাদেবের আসন ভাঙচুর করার কথা স্বীকার করে বলেন, মন্দিরে পূজা অর্চনা করতে হলে তারা নিজেরাই করবেন। অন্য কাউকে করতে দিবেন না।
এবিষয়ে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ শেরপুর উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সংগ্রাম কুন্ডু বলেন, “সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। যে কারণেই করে থাকুক, এই ঘটনা দুঃখজনক। আমরা উভয় পক্ষের সাথে আলোচনা করে সুষ্ঠু সমাধানের চেষ্টা করব।”
এ নিয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবু কুমার সাহা বলেন, “ওই মন্দিরে এই ঘটনা জানার পরেই রবিবার রাতেই সেখানে গিয়ে মন্দিরের পূজারীসহ স্থানীয়দের সাথে কথা বলেছি। এ ব্যাপারে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”