ভিনগ্রহের প্রাণী বা এলিয়েনের দেহাবশেষের প্রদর্শনী! অদ্ভুত মনে হলেও মেক্সিকোর পার্লামেন্টে ঘটেছে এমন ঘটনা। আয়োজকদের দাবি, এসব দেহাবশেষ হাজার বছরের পুরনো। এ খবর সামনে আসতেই বিষয়টি নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা।
ভিনগ্রহের প্রাণীরা নাকি মাঝেমধ্যেই পৃথিবীতে আসে। এ নিয়ে সারাবিশ্বেই জল্পনার শেষ নেই। এবার মেক্সিকোতেও বিষয়টি নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে চলতি সপ্তাহে।
গত বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুটি মমির প্রদর্শনী করা হয় মেক্সিকোর পার্লামেন্টে। যার সঙ্গে মানুষের দেহের একেবারেই কোনো মিল নেই। কাঁচের বাক্সে রাখা এসব দেহাবশেষের প্রত্যেক হাতে তিনটি করে আঙুল, আর মাথাটাও বেশ প্রসারিত।
ওই প্রদর্শনীর আয়োজক মেক্সিকোর সাংবাদিক জেইমি মওসান। তার দাবি, মমি করা ওই দুটি মরদেহ পৃথিবীর কোনো প্রাণীর নয়। তিনি বলেন, এলিয়েন বা ভিনগ্রহের প্রাণীর অস্তিত্ব প্রমাণ করতেই পার্লামেন্টে বিশেষ এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
পার্লামেন্টে মেক্সিকান রাজনীতিকদের মমি দুটি দেখিয়ে জেইমি মওসান বলেন, আড়াই-তিন ফুট উচ্চতার কঙ্কালগুলো ২০১৭ সালে পেরুর প্রাচীন কাসকো অঞ্চলের নাজকা লাইনস এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। তার দাবি, মেক্সিকো সরকারের পক্ষ থেকে দুই দেহাবশেষকে দেশটির অটোনমাস ন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্বন ডেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়।
কার্বন ডেটিংয়ে দেখা গেছে, এই কঙ্কাল দুটি প্রায় ১০০০ বছর পুরনো। আরও জানা গেছে, ওই কঙ্কাল দুটির ৩০ শতাংশ ডিএনএ একেবারেই অপরিচিত। অর্থাৎ পৃথিবীতে এত শতাব্দী ধরে যত ধরনের প্রাণী ছিল তাদের কারও সঙ্গেই মিল নেই। এর ভিত্তিতেই মনে করা হচ্ছে, প্রাণী দুটি ভিন গ্রহের।
এই প্রথম ভিনগ্রহের প্রাণী দাবি করে কোন প্রদর্শনী করা হয়েছে। এই প্রদর্শনীর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্বজুড়ে শোরগোল পড়ে গেছে। লাখো-কোটি মানুষের একই প্রশ্ন, মমিগুলো কি আসল? এ কি সত্যিই ভিনগ্রহের কোনো প্রাণীর কঙ্কাল? আমরা মানুষেরা কি তাহলে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে একা নই?
মেক্সিকোর কঙ্কাল দুটি নিয়ে কথা বলেছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসাও। গত বৃহস্পতিবার ওই মমি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে নাসার আনআইডেন্টিফায়েড অ্যানোমেলাস ফেনোমেনা (ইউএপি) বিভাগের চেয়ারম্যান ও প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির অ্যাস্ট্রোফিজিক্স ডিপার্টমেন্টের সাবেক প্রধান ডেভিড স্পারগেল বলেন, ‘আমি বিষয়টা ট্যুইটারে দেখেছি। যখন আপনি কোনো অদ্ভুত কিছু দেখবেন, সেটা অন্যদের সঙ্গেও শেয়ার করা উচিৎ।’
ওই গবেষকের মতে, ‘ওই বিষয়টি (মেক্সিকোর মমি) কী, কী তার ধরণ, তা আমরা জানি না। নমুনাটি বিশ্বের বিজ্ঞানী মহলের সামনে পেশ করলে তবে তা নিয়ে গবেষণা করা যাবে।’
বেশকিছু ধরে আন আইডেন্টিফায়েড ফ্লাইং অবজেক্ট তথা ইউএফও নিয়ে গবেষণা করছে নাসা। গত বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত নাসার সদর দফতরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সেই গবেষণার প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
ইউএফও গবেষণা রিপোর্টে নাসা বলেছে, আকাশে দেখা গেছে এমন বেশিরভাগ ইউএফও সম্পর্কে ব্যাখ্যা পাওয়া গেছে। তবে এমন কিছু বস্তু আছে যা মানুষের তৈরি বা প্রাকৃতিক ঘটনা।
নাসা জানিয়েছে, আকাশে যদি এমন কোনো বস্তুর দেখা পাওয়া যায় যা চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছে না, তাহলে সেই বস্তুটিকে সঙ্গে সঙ্গেই ভিনগ্রহের প্রাণীদের মহাকাশযান বলে দেয়া যাবে না। সেটি অন্য কিছুও হতে পারে।
তবে একইসঙ্গে নাসা এও বলছে, প্রাণের অস্তিত্ব সৌরজগতেই সীমাবদ্ধ নেই। সৌরজগতের বাইরেও প্রাণ থাকতেই পারে। কিন্তু এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না।