রডের পরিবর্তে সুপারির চটা দিয়ে স্লাব নির্মাণ করায় কয়েক মাসেই ভেঙে পড়েছে পিরোজপুরের কাউখালীর একটি আয়রন ব্রিজ। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
পিরোজপুরের কাউখালীর দু’টি ব্রিজসহ বেশ কিছু পুরাতন কাজ মেরামতের জন্য এলজিইডি ২০২১-২২ অর্থ বছরে কাউখালী উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারের কার্যালয় থেকে ৬টি কাজের জন্য একটি দরপত্র আহ্বান করে। যার ব্যয় ধরা হয় ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৫০০ টাকা। এর মধ্যে সদর ইউনিয়নের কাঠালিয়া খাল গোড়ায় নুরুল ইসলাম শরীফের বাড়ির সামনে একটি আয়রন ব্রিজের মেরামত কাজ করে পিরোজপুরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স হালিমা এন্টারপ্রাইজ। কিন্তু পুনর্নির্মাণের কয়েক মাস পরেই ব্রিজের ওপরের কিছু স্লাব ভেঙে যায়। রড দিয়ে এ স্লাবগুলো নির্মাণ করার কথা থাকলেও রডের পরিবর্তে ঠিকাদার ঢালাইয়ে সুপারির চটা ব্যবহার করে।
গত বুধবার সকালে এর কয়েকটি স্লাব ভেঙে পড়লে মুহূর্তেই ফেসবুকে তা ছড়িয়ে পড়ে। ফলে এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকার জনগণ এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা রমেশ লাল বলেন, ‘আমাদের চলাচলের একমাত্র ব্রিজটি ভেঙে পড়ায় চলাচলে খুব সমস্যা হচ্ছে। যারা রডের পরিবর্তে সুপারি গাছের চটা দিয়েছে তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়া হোক, কারণ তারা দেশের শত্রু।’
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা আকরাম হোসেন বলেন, ‘ঠিকেদারদের নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে এ ধরনের কাজ তারা করতে পারছে। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হোক। এই শাস্তি দেখে যাতে অন্য ঠিকাদাররা কখনো এরকম কাজ করতে আর সাহস না পায়। এই ব্রিজটি পুনরায় মেরামত করে আমাদের চলাচলের সুব্যবস্থা করার দাবি জানাচ্ছি।’
এ ঘটনার পর কাউখালী উপজেলা চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং এর সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হন। পরে তাদের এক সভায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স হালিমা এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে চিঠি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান কাউখালী উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবু সাঈদ মিঞা।
এদিকে এটি একটি অব্যবস্থাপনা স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেন কাউখালীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল মোল্লা।
তিনি বলেন, ‘যারা এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছেন তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।’
তবে এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে একাধিক বার যোগাযোগ করেও তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
২০২১-২২ অর্থ বছরে প্রায় দেড় লাখ টাকা ব্যয়ে এ আয়রন ব্রিজটি পুনর্নির্মাণ করা হয়।