গ্রিক বা রোমের পৌরাণিক কাহিনিগুলোতে হরহামেশাই পাওয়া যায় অদ্ভূত কিছু প্রাণীদের কথা। যেমন- একচোখের মানুষ, পাখাযুক্ত উড়ন্ত সাপ, ভ্যামপায়ার ইত্যাদি। এসব প্রাণীর অস্তিত্ব কি শুধুই কল্পকাহিনিতেই নাকি বাস্তবেও রয়েছে তা কি আপনি জানেন?
বিশেষজ্ঞরা অবশ্য পৃথিবীর অনেক প্রাণীদের মধ্যেই পৌরাণিক কাহিনির অদ্ভূত সেই প্রাণীদের সঙ্গে মিল পেয়েছে। আসুন, একে একে সেসবের বিস্তারিত তথ্য জেনে নিই-
১। দ্য সাইক্লোপ বা একচোখের মানুষ: প্রায় ৩ হাজার বছর আগে ওডিসিতে সাইক্লোপের কথা উল্লেখ ছিল। গ্রীক এবং রোমান পৌরাণিক কাহিনিতে এ প্রাণীর সবচেয়ে বেশী উপস্থিতি পাওয়া যায়। বাস্তব জীবনেও কিন্তু এর অস্তিত্ব আছে।
বর্তমানে সাইক্লোপিয়া নামে একটি শারীরিক অবস্থা সমন্ধে জানতে পেরেছেন গবেষকরা। বিরল এই শিশুর জন্ম হয় এক চোখ নিয়ে। ওই শিশুর নাক নেই তবে আছে চোখের উপরে ছোট নাকের মত একটি মুখাবয়ব। গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে শিশুর মস্তিষ্কের একটি গুরুতর বিকৃতির কারণেই এমনটা ঘটে থাকে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে সাইক্লোপিয়া রোগটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গর্ভপাত ঘটায় বা মৃত সন্তানের জন্ম দেয়।
২। পাখাযুক্ত উড়ন্ত সাপ: প্রাচীন মিশরীয় পুরাণে উড়ন্ত সাপ ছিল খুবই সাধারণ। গ্রীক ঐতিহাসিক হেরোডোটাস তার উপাখ্যানে এই উড়ন্ত সাপের কথা বলেছেন। এই সাপের কথা তিনি শুনেছিলেন আরবের ভ্রমণকারীদের মুখেও। এরা বসবাস করতো ব্রাসিলিয়া গাছে। তবে এর সত্যিকারের অস্তিত্ব যদি খুঁজতে যাই তবে বলতে হয় ‘ওয়াদি আল হিতান’ এর কথা।
এ স্থানে তিমিদের বিবর্তনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রায় ১০০০ এরও বেশি তিমির কঙ্কাল পাওয়া গেছে এখানে। ধারণা করা হয়, প্রাচীন মানুষেরা এই কঙ্কালকেই সাপ ভাবতেন এবং ফ্লিপারগুলোকে পাখা ভাবতেন। এছাড়া মিশরীয়দের পুরাণে বিরাট আকারের জীবন্ত সাপের কথাও বলা হয়েছে। ইতিহাসবিদদের ধারণা বিরাট আকারের তিমিকে হয়তো তারা এই উড়ন্ত সাপ ভাবতেন।
৩। ভ্যামপায়ার: ভ্যামপায়ার এর কথা কম বেশি সবাই শুনেছেন। বিজ্ঞান বলছে, জলাতঙ্কে আক্রান্ত রোগীদের আর ভ্যামপায়ারদের সিমটম্পস কাছাকাছি। লেখক ব্রাম স্টোকার ১৮৯৭ সালে ড্রাকুলায় যখন ভ্যামপায়ারদের কথা বলেছিলেন তখন হাঙ্গেরীতে ১৭ শতকে জলাতঙ্ক মহামারী আকার ধারণ করেছিল। তাই এই জলাতঙ্ক রোগ থেকেই হয়তো লেখক ভ্যামপায়ার এর ধারণা পেয়েছিলেন বলে মনে করছেন নেটিজেনরা। ভ্যাম্পায়ারের উদাহরণ হিসেবে অতি পরিচিত রক্তচোষা বাদুড়ের কথাও বলা যায়। এসব বাদুড় মানুষের রক্ত পান না করলেও প্রাণীদের রক্ত পান করে।