পিরোজপুরে চাঞ্চল্যকর ৩টি ক্লুলেস হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করে সংবাদ সম্মেলন করেছে পিরোজপুর জেলা পুলিশ।
রোববার সকাল ১০ টায় পিরোজপুর পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে ব্রিফিং করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শফিউর রহমান। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ১৫ দিনে ঘটা ৩টি হত্যাকান্ড ঘটার অব্যবহিত পরেই পুলিশ কৌশলপূর্ণ ভাবে ও ঝুঁকি নিয়ে সংশ্লিষ্ট আসামীদের আটক করে। দ্রুত তৎপরতার কারনে উল্লেখিত মামলার রহস্য উদঘাটন করে আসামীদের আটক করা সম্ভব হয় বলে তিনি জানান। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোস্তাফিজুর রহমান, পিরোজপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আবির মোহাম্মদ হোসেন, নাজিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ এবং ভান্ডারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ সহ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৭ আগস্ট সন্ধ্যায় পিরোজপুর শহরের শিকারপুরে অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কমকর্তা সত্যেন্দ্রনাথ ঘরামীর স্ত্রী হাসি রানী ঘরামীকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ হত্যা করে তার গলায় ও কানে থাকা স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে সত্যেন্দ্রনাথ সদর থানায় মামলা করলে পুলিশ তথ্র প্রযুক্তির সহায়তায় ও গোপন তথ্যমতে শহরের ঝাটকাঠী গ্রামের মানিক শেখের পুত্র মোঃ রুবেল শেখকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে এবং লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করে। ঘাতক রুবেল শেখ নিহত হাসি রানীর বাসার কাছে একটি বাসায় কেয়ার টেকারের কাজ করতো বলে জানান পুলিশ সুপার।
অপরদিকে গত ১৮ আগস্ট নাজিরপুর উপজেলার বৈবুনিয়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী মো. ওমর ফারুকের স্ত্রী কোমেলা বেগম (৪৫) কে রাত ৪টার দিকে ঘাতক বালিশ চাঁপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এ ব্যাপরে থানায় মামলা হলে পুলিশ স্থানীয় ও ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে ব্যাপক তল্লাশি মাধ্যমে গত ২৯ আগস্ট মুল আসামী নিহতের প্রতিবেশি শাহজাহান সরদারের ছেলে মোঃ হাসান সরদারকে আটক করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আসামী হাসান স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি দেয় প্রবাসীর স্ত্রীর টাকা, স্বর্ণালঙ্কার লুটকরার জন্য তারা ঘরে প্রবেশ করে। ভিকটিম তাদের চিনে ফেলায় তারা বালিশ দিয়ে শ্বাসরোধ করে কোমেলা বেগমকে হত্যা করে। মুল আসামী গ্রেফতার হলেও তার অপর সহযোগী এখনও পলাতক রয়েছে।
এছাড়া ১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ভান্ডারিয়া সদর উপজেলায় সাদিয়া আক্তার মুক্তা (১৮) নামের এক গৃহবধুকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগে স্বামী ও শ্বাশুরীসহ ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। স্বামী মুনিম জোমাদ্দার, মুনিমের মা ছবি বেগম এবং সহযোগী বন্ধু সিয়াম খান বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারয় বন্ধুদের সহযোগিতায় এ হত্যাকান্ড ঘটায় বলে জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানান পুলিশ সুপার।
পুলিশ সুপার বলেন, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া হত্যাকান্ডাগুলো কোন প্রকার তথ্য প্রমান না থাকায় অপরাধীদের সনাক্ত করতে পুলিশকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। পুলিশ তার দক্ষতা ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অপরাধীদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে। এই তিনটি হত্যার রহস্য উদঘাটনের মাধ্যমে জেলার এ পর্যন্ত ঘটা সকল হত্যা কান্ডের রহস্য উদঘাটিত হয়েছে।