মিঠুন গোস্বামী, রাজবাড়ী প্রতিনিধি।।
রাজবাড়ীতে পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ১১৬ জনের নাম উল্লেখ সহ আরও ২৭০০ জন নেতাকর্মীকে আসামি করে ২ টি মামলা হয়েছে।
শনিবার দিবাগত রাতে রাজবাড়ী সদর থানায় ১টি ও রাজবাড়ী রেলওয়ে থানায় অপর আরেকটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় পুলিশ ২৮ জনকে গ্রেফতার করেছে।
জানা গেছে, বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার দুপুরে রাজবাড়ী জেলার বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম ও নাসিরুল হক সাবু গ্রুপ একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বের করে।
আনন্দ শোভাযাত্রার মাঝপথে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে প্রবেশপথে সরকারি বিভিন্ন প্রচারপত্র ও আওয়ামী লীগের তোরণ ভাঙ্চুর করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীদের এসব কার্যক্রম বাধা দিতে গেলে পুলিশের উপর হামলা চালায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এতে রাজবাড়ী সদর থানা পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করলে নেতাকর্মীরা রাজবাড়ী রেলস্টেশন এলাকায় প্রবেশ করে সেখানেও পুলিশের উপর পাথর নিক্ষেপসহ রেলস্টেশন এলাকা ভাঙ্চুর করে।
এতে রাজবাড়ী রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোমনাথ বসু ও দুই নারী পুলিশসহ চারজন গুরুতর আহত হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাজবাড়ী রেলস্টেশন ভাঙ্চুর ও রেলওয়ে পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় উপ-পরিদর্শক বিধান চন্দ্র বাদী হয়ে এজাহারনামীয় ৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় ৪৫০ থেকে ৫০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
অন্যদিকে রাজবাড়ী সদর থানায় উপ-পরিদর্শক সোহেল রানা বাদী হয়ে এজাহারনামীয় ১১১ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন।এই মামলায় ২০০০ থেকে ২২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
মামলা প্রসঙ্গে রাজবাড়ীর বেশ কয়েকজন বাসিন্দারা বলেন, রাজবাড়ী জেলা বিএনপির দুটি গ্রুপ শোভযাত্রার আয়োজন করে। বিএনপির একটি অংশের শোভাযাত্রা শহরের আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়মের বাসা থেকে বের হয়। শোভাযাত্রাটি পান্না চত্ত্বর হয়ে ফেরার পথে শোভাযাত্রায় থাকা কিছু নেতাকর্মীরা জেলা প্রশাসকের প্রবেশপথে সরকারি প্রচারপত্র ও তোরণ ভাঙ্চুর করেন। এছাড়া রাস্তায় থাকা আওয়ামী লীগের পোস্টার ছিড়ে ফেলেন।
সেটির নিষেধ করাতেই পুলিশের উপর হামলা করা হয়েছে। অন্যদিকে রেলওয়ে পুলিশের উপর যেভাবে হামলা করা হয়েছে সেটা নিন্দনীয়। কয়েকজন নারী পুলিশ সদস্যকে প্রকাশ্যে হামলা করেছে বিএনিপর ও সহযোগী সংঘগঠনের নেতাকর্মীরা। এই হামলার বিচার হওয়া দরকার।
নেতাকর্মীদের মামলা প্রসঙ্গে রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সাবেক সংসদ ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম বলেন, আমি বিস্মিত! মামলায় এত আসামি করা হয়েছে আমি বিস্মিত! আমার আর কিছু বলার নেই।
রাজবাড়ী রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোমনাথ বসু বলেন, আমাদের মামলায় রাজবাড়ী সদর থানায় ৫ আসামিকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেছেন। তারা রাজবাড়ী সদর থানার পুলিশে উপর হামলা মামলারও আসামি। আমরা তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে বিজ্ঞ আদালতে রিমান্ডের আবেদন করবো।
রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার জি. এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, রাজনৈতিক স্বাধীনতার নামে পুলিশের উপর হামলা করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় ২৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।