মিঠুন গোস্বামী, রাজবাড়ী প্রতিনিধি।।
রাজবাড়ীর কালুখালীতে ফেসবুকে পরিচয়ের পর প্রেমের ফাঁদে ফেলে এক নারীকে দলবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ শেষে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার ঘটনায় আরও তিন আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২ টায় রাজবাড়ী পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ সুপার জি. এম. আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেফতার কৃতরা হলেন,কালুখালী উপজেলার বি-কয়া এলাকার দুলাল খানের ছেলে রবিউল খান (২১), একই এলাকার মো: রমজান মন্ডলের ছেলে মো: হাকিম মন্ডল (২০) ও পাংশা উপজেলার আশুরহাট এলাকার মো: নজরুল ইসলামের ছেলে মো: হাসিব খান(২০)।এর আগে গত (৮ আগষ্ট) প্রধান আসামী মাহফুজ মন্ডল (২১) কে গ্রেফতার করা হয়।
ভুক্তভোগী জান্নাতুল নেছা (১৯) কালুখালী উপজেলার সাওরাইল ইউনিয়নের পাতুরিয়া গ্রামের আবুল কাশেম ব্যাপারীর ছোট মেয়ে।গত চার বছর আগে পাশের উপজেলা বালিয়াকান্দিতে বিয়ে হলেও এক বছর আগে ডিভোর্স হয়ে যায়।এক সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতেই বসবাস করতেন তিনি।
পুলিশ সুপার জি. এম. আবুল কালাম আজাদ জানান,ঘটনার দুই দিন আগে প্রধান আসামী মাহফুজ মন্ডলের সাথে ওই নারীর ফেসবুকে পরিচয় হয়।ম্যাসেঞ্জারে কথোপকথনের একপর্যায়ে তাদের প্রেমের সম্পর্ক হয়।ধর্ষণ নারীদের পরিকল্পনা অনুযায়ী বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই নারীকে ঘর থেকে বেড় করা হয়।ঘটনার দিন রাত সাড়ে ১২ টায় ওই নারী রাস্তার উপর আসলে প্রধান আসামী মাহফুজ প্রতিবন্ধী হওয়ায় তার পছন্দ হয় না।সে ফিরে যেতে চাইলে অন্য আসামী রবিউল বলেন ম্যাসেঞ্জারে সে কথা বলছে।বাকি সকলে তার বন্ধু, তারা তাদের বিয়ের সহযোগিতা করবেন। লোকচক্ষুর অন্তরালের জন্য আসামীরা ওই নারীকে পাটক্ষেতের ভেতর দিয়ে নিয়ে যায়।আসামীদের পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী পাটক্ষেতের ভেতর দলবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ করে। ওই নারী আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে চাইলে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়। তাদের ধারণা ছিলো পাটক্ষেতের ভেতর কেউ আসবে না, রাতে কুকুর শেয়াল খেয়ে ফেলবে কেউ আর বুঝতে পারবে না।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ জুলাই রাত থেকে নিখোঁজ ছিল জান্নাতুল। নিখোঁজের ১২ দিন পর গত ১৭ জুলাই দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কালুখালী উপজেলার সাওরাইল ইউনিয়নের পাতুরিয়া এলাকার সিরাজ মন্ডলের পাটখেতের ভেতর থেকে একটি মরদেহের মাথার খুলি, চুল ও হাড়সহ বিভিন্ন অংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকা অবস্থায় দেখতে পায় স্থানীয়রা স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ এসে মরদেহের কঙ্কাল উদ্ধার করে।
মরদেহের পাশে পড়ে থাকা ভ্যানিটি ব্যাগ, পায়ের স্যান্ডেল, পরিহিত জামা ও ওড়না দেখে পরিবার মৃত জান্নাতুল নেছাকে শনাক্ত করে। পরে ১৮ জুলাই জান্নাতুলের মা নাজমা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করে।