প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম নববী (রহ.) সংকলিত মহানবী (সা.) এর ৪০ হাদিস গ্রন্থটি মালয়েশিয়ার মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করতে নির্বাচিত করা হয়েছে।
গত ১৯ আগস্ট স্কুল পর্যায়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর বাণী বা ‘হাদীস’ এর মূল্যবোধকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে মালয়েশিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই মডিউল চালু করে। এতে আরও বলা হয়েছে, মডিউলটির বাস্তবায়নে কেবল মুসলিম শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা জড়িত থাকবে।
ইমাম আল-নওয়াবির ৪০টি হাদিস মূল্যায়ন মডিউল বাস্তবায়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অঙ্গীকারবদ্ধ বলে জানিয়েছেন দেশটির শিক্ষামন্ত্রী ফাধলিনা সিদেক।
তিনি বলেন, কমিউনিটিতে মৌলবাদ ও চরমপন্থা দমনে মডিউলটি গুরুত্বপূর্ণ এবং ইসলামের সার্বজনীন মূল্যবোধ ও চর্চার বাস্তব চিত্র তুলে ধরবে। পাইলট প্রকল্পে শুধুমাত্র জাতীয় ধর্মীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত ধর্মীয় বিদ্যালয়ের মুসলিম শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এটিতে জড়িত থাকবে।
শিক্ষামন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেন, এরপর এটি শুধুমাত্র ইসলামিক শিক্ষাবিষয় থেকে স্কুল ও ক্লাসে প্রসারিত করা হবে। ফাধলিনা এর আগে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বকারী ১৬টি বেসরকারি সংস্থার সাথে মডিউল, এর বাস্তবায়ন এবং জাতীয় শিক্ষা সম্পর্কিত বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন।
মডিউলটির পাইলট প্রকল্পে জাতীয় ধর্মীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয় (এসএমকেএ) এবং ২২৮টি সরকারি সহায়তাপ্রাপ্ত ধর্মীয় বিদ্যালয়ের (এসএবিকে) মুসলিম শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জড়িত থাকবে। এরপর আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে তা শুধুমাত্র ইসলামিক শিক্ষা বিষয়ের স্কুল এবং ক্লাসগুলোতে প্রসারিত করা হবে।
সংস্থাটির উপমন্ত্রী লিম হুই ইং বলেন, কিছু এনজিও মডিউলের বাস্তবায়ন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। সুতরাং তাদের (এনজিওসহ) উদ্বিগ্ন হওয়ার দরকার নেই, আমরা তাদের উদ্বেগ বুঝতে পারি, তবে আমরা মন্ত্রণালয়ে তাদের সাথে দেখা করতে এবং এ বিষয়ে কথা বলতে প্রস্তুত রয়েছি।
সারা দেশের স্কুলগুলোতে ‘ইমাম আল-নওয়াবির ৪০ হাদিস’ মূল্যায়ন মডিউল বাস্তবায়ন নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে যেকোনো পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করতে প্রস্তুত শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
অন্যদিকে, সারাওয়াক রাজ্যের শিক্ষা, উদ্ভাবন এবং প্রতিভা উন্নয়ন মন্ত্রী দাতুক রোল্যান্ড সাগাহ উই ইন বলেছেন, মডিউলটি বাস্তবায়নে তাদের কোন সমস্যা নেই, কারণ এটি অমুসলিম ছাত্রদের জড়িত করে না।
এছাড়া মালয়েশিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ইসলামী শিক্ষা বিভাগের জ্যেষ্ঠ উপপরিচালক ওমর সালেহ জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সুপারিশে হাদিস শিক্ষার মডিউলটি তৈরি করা হয়। তার নির্দেশনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমে সাড়া দিতে হাদিস গ্রন্থ বিতরণ কর্মসূচ হাতে নেয়া হয়। যেন স্কুল পর্যায়ে থাকতেই হাদিসের সঙ্গে মুসলিম শিক্ষার্থীদের পরিচয় ঘটে এবং তাদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ মনোভাব ও গভীর ধর্মীয় বোঝাপড়া গড়ে ওঠে।