মাসে ১৯ হাজার টাকা জমা করেই আপনি হয়ে যেতে পারেন কোটিপতি। এটি স্বপ্ন নয়, বাস্তব। তবে সময় লাগবে ২০ বছর। আর চার বছরে কোটিপতি হতে চাইলে মাসে জমাতে হবে পৌনে দুই লাখ টাকা। এমন সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করেছে দেশের ব্যাংকগুলো। এ ধরনের স্কিমে সাড়া পড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তারা। আর সাধারণ গ্রাহকের পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও লাভবান হচ্ছে বলে মত অর্থনীতিবিদদের।
টাকায় টাকা আসে বা অর্থই অর্থ বাড়ায়–চিরন্তন এ সত্যের পেছনে গল্প থাকে অনেক সময়ই বৈধ-অবৈধতার। তবে সময় পেরিয়েছে, আর্থসামাজিক উন্নয়নে আর্থিক সক্ষমতা বেড়েছে মানুষের। তাই মনের বাসনা পূরণে এগিয়ে এসেছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। গ্রাহকদের আকৃষ্ট করছে সাম্প্রতিক কোটিপতি ও মিলিয়নিয়ার স্কিমগুলো। এসব স্কিমে বৈধভাবেই যে কেউ হয়ে উঠতে পারেন কোটিপতি বা মিলিয়নিয়ার।
ব্যাংক অনুসারে কোটিপতি স্কিমগুলো সাজানো হয়েছে ৪ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত। সাধ্যানুযায়ী প্রতিমাসে কেউ ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা জমিয়ে ৪ বছরেই হতে পারেন কোটিপতি। কিংবা দীর্ঘ মেয়াদে ২০ বছরের স্কিমে প্রতিমাসে সর্বনিম্ন ১৯ হাজার টাকা জমিয়েই এ সুবিধা নিতে পারেন গ্রাহকরা। অন্যদিকে ২০ বছর প্রতিমাসে ২ হাজার টাকা জমিয়েই মিলিয়নিয়ার বা ১০ লাখ টাকার মালিক হতে পারেন গ্রাহকরা। ব্যাংকাররা জানান, মানুষের স্বপ্নপূরণে কাজ করছে স্কিমগুলো।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের রিটেইল ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান মো. সাফকাত হোসাইন সময় সংবাদকে বলেন, ‘১৫ বছর বা তার বেশি বছরের স্কিমে আমাদের গ্রাহক বেশি। কারণ, এই কিস্তি বহন করাটা তাদের জন্য সুবিধাজনক।’
রূপালী ব্যাংকের লোকাল অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক মতিলাল ফকির বলেন, ‘যারা সঞ্চয় করে বেশি পরিমাণ টাকা একসঙ্গে পেতে চায়, তাদের জন্য এই স্কিম সুবিধাজনক। এ জন্যই এ ধরনের স্কিম চালু করা হয়েছে।’
ব্যাংকগুলোর কোটিপতি ও মিলিয়নিয়ার স্কিমের মোট অঙ্কের ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ টাকা জমা করে গ্রাহক, ‘আর বাকি অর্থ লভ্যাংশ হিসেবে দেয় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক।’
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ব্যাংকের টাকা জমানোর মাধ্যমে চাপ কমে মূল্যস্ফীতি ও রিজার্ভের ওপর। নগদ অর্থের জোগানে লাভবান হয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও।
অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির বলেন,
এই কোটিপতি স্কিমে সঞ্চয় করাটা অর্থনীতির জন্য ভালো। গ্রাহকদের জন্য যেমন ভালো, তেমনি আমাদের এক্সটার্নাল সেক্টর, বিশেষ করে ফরেন রিজার্ভের ওপর যে চাপ ছিল, সেটা কমাতে সহায়তা করে। এ ছাড়া বাজারে যে মূল্যস্ফীতির চাপ, সেটাও কিছুটা কমতে সহায়তা করে। একই সঙ্গে ব্যাংকে তারল্য সংকট কাভার করতে সক্ষম হয়।
স্কিমগুলো পরিচালনায় কৌশলী বেশি হওয়া ও আমানতে সুদহার বেশি থাকায় ডিপোজিটে এগিয়ে বেসরকারি ব্যাংকগুলো। মেয়াদ শেষে গ্রাহকের মোট টাকা থেকে সার্ভিস চার্জের সঙ্গে র্নিধারিত উৎসে কর ১৫ শতাংশ কেটে রাখবে ব্যাংকগুলো। আর টিআইএন নম্বর থাকলে কাটা যাবে ১০ শতাংশ টাকা।