সবসময় ক্যামেরার পেছনেই কাজ করেছেন বাংলাদেশের খ্যাতিমান নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। অবশ্য তিনি জানেন, কীভাবে একজন অভিনয়শিল্পীদের কাছ থেকে অভিনয়টা আদায় করে নিতে হয়। তবে এ নির্মাতা নিজে কখনও অভিনয়ের পথ মাড়াননি। অবশেষে নিজের পরিচালনায় অভিনয়ে এলেন তিনি।
আরও জানা যায়, প্রথমবার অভিনয় দিয়েই যাচ্ছেন বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে।
বুধবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে এসব তথ্য জানান এ নির্মাতা।
তিনি জানান, ‘পঁচিশ বছর ধরে কাজ করছি। নানা রকম গল্প বলার চেষ্টা করেছি। সেগুলোর একেকটা একেক রকমভাবে মানুষকে স্পর্শ করেছে। কোনোটা বেশি, কোনোটা হয়তো কম। অভিনয় কেমন হওয়া উচিত, কোন গল্প বলা জরুরি–এসব নিয়ে সারাক্ষণই নিরীক্ষা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু যে কাজটা কখনোই করার চেষ্টা করিনি, সেটা হলো অভিনয়।’
এ নির্মাতার ভাষ্য: “আমি এবং তিশা দুজনই জানি ‘অটোবায়োগ্রাফি’ সিনেমাটি লেখার সময় থেকেই যে, এখানে আমাদের দুজনকেই অভিনয় করতে হবে। প্রথমদিকে এটা নিয়ে আমার মধ্যে ইতস্তত ভাব ছিল। কারণ, অভিনয় একটা ভালনারেবল কাজ। আর এই গল্পে অভিনয় তো আরও ভালনারেবল ব্যাপার। রেদওয়ান রনি গল্প শোনার পর বলল, বস, এই ক্যারেক্টার আপনাকেই করতে হবে। তারপরও আমার সংশয় না কাটলে তিশা আমাকে হেল্প করে সিদ্ধান্ত নিতে। ও (তিশা) বলে, ‘এই গল্প তুমি জীবনে একবারই করতে পারবে। করে ফেলো, প্লিজ!’ তার পর তো বাকিটা ইতিহাস…।”
“তৈরি হয়ে গেল ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’ ওরফে ‘অটোবায়োগ্রাফি’! মিনিস্ট্রি অব লাভের জন্য বানানো আমার দ্বিতীয় ছবি। অপেক্ষায় আছি কত দ্রুত দর্শক ছবি দুইটা দেখতে পায়।”
শেষে ফারুকী লেখেন, ‘আজকের দিনটা বাংলাদেশের সিনেমার জন্য খুব সুন্দর একটা দিন। যেখানে ভ্যারাইটির গ্লোবাল বুলেটিনে হেডলাইন হচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের তিনটা ছবি, একটা এপিএম প্রজেক্ট আর একজন এএফএ পার্টিসিপেন্ট এবার বুসানে নির্বাচিত। তিনটা ছবির মধ্যে তিনটাই দুই কম্পিটিশনে! হোয়াট আ বিউটিফুল ইয়ার।’
জানা যায়, চরকিতে ১২ জন নির্মাতা ১২টি চলচ্চিত্র নিয়ে আসছেন। আর এই পুরো প্রজেক্টটির নাম দেয়া হয়েছে ‘মিনিস্ট্রি অব লাভ’। এটির তত্ত্বাবধানে আছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। এই প্রজেক্টের ২টি সিনেমা নির্মাণ করছেন তিনি নিজেই। এগুলো হলো: ‘মনোগামী’ ও ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’।
অন্যদিকে, ২৮তম বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পর্দা উঠবে আগামী ৪ অক্টোবর। ১০ দিনব্যাপী চলা এই উৎসবের পর্দা নামবে ১৩ অক্টোবর। উৎসবে ফারুকীর সিনেমা ছাড়াও বাংলাদেশ থেকে আরও দুটি সিনেমা নির্বাচিত হয়েছে। এগুলো হলো ইকবাল এইচ চৌধুরী নির্মিত ‘দ্য রেসলার’ ও বিপ্লব সরকার পরিচালিত ‘দ্য স্ট্রেঞ্জার’। ছবি দুটি লড়বে সম্ভাবনাময় নির্মাতাদের জন্য নির্ধারিত বিভাগে। আর ফারুকীর সিনেমাটি নির্বাচিত হয়েছে এশিয়া থেকে প্রতিষ্ঠিত চলচ্চিত্র নির্মাতাদের ‘কিম জিসুক’ বিভাগে। প্রয়াত পরিচালক কিম জিসুকের স্মরণে এ পুরস্কার চালু করা হয়েছিল। এতে ফারুকীর আলোচিত এই সিনেমা ছাড়াও আরও নয়জন দাপুটে নির্মাতার সিনেমা জায়গা করে নিয়েছে।