Homeঅর্থনীতিশ্রীলঙ্কা আর বাংলাদেশের অবস্থা ভিন্ন: বাণিজ্যমন্ত্রী

শ্রীলঙ্কা আর বাংলাদেশের অবস্থা ভিন্ন: বাণিজ্যমন্ত্রী

শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের অবস্থা এক নয় উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, শ্রীলঙ্কা ছোট দেশ হওয়ায় এবং তাদের পর্যটন খাতের মতো বড় একটি অর্থনৈতিক শক্তি থাকায় তারা সংকট উতরে যেতে পেরেছে। এর সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা দিয়ে লাভ নেই।

বুধবার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে সফররত ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ বিজনেস কাউন্সিলের সঙ্গে সভাশেষে ‘শ্রীলঙ্কার মূল্যস্ফীতি কমলেও বাংলাদেশে কেন কমছে না’–এমন প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, গত বছর সেপ্টেম্বরে শ্রীলঙ্কার মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৬৯ দশমিক ৮ শতাংশে। কিন্তু চলতি বছর জুলাইয়ে গভর্নর নন্দলাল বীরাসিংহের নেতৃত্বাধীন সেন্ট্রাল ব্যাংক অব শ্রীলঙ্কা (সিবিএসএল) মূল্যস্ফীতির হার জুলাইয়ে ৬ দশমিক ৩ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে।

বিপরীতে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যানুযায়ী, পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে জুলাই মাসে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ। এর পাশাপাশি দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

মূলত নিত্যপণ্যের বাজারে সিন্ডিকেটের কারসাজিতে দিনকে দিন পণ্যের দাম বেড়েই যাচ্ছে। এ বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে বলেছেন, সিন্ডিকেটে হাত দিলে বাজারে সংকট সৃষ্টি হবে। এ প্রসঙ্গে মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, এমন কিছু হয়নি যে সিন্ডিকেট ভাঙা যাবে না। যদি বাণিজ্যমন্ত্রী এ ধরনের কথা বলে থাকেন, তাকে জবাবদিহি করতে হবে।

এ বিষয়ে বুধবার (৩০ আগস্ট) বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির অভিমত জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন,

প্রধানমন্ত্রী কোন অবস্থায় এ কথা বলেছেন সেটি আমি জানি না। সিন্ডিকেট আছে, সিন্ডিকেট ভাঙব এ ধরনের কথা আমি বলিনি। বলেছি যে, আমাদের যখন জিনিসপত্রের দাম বাড়ে তখন আমরা ন্যায্য দামে বিক্রি করার চেষ্টা করি। সেটি মূলত ভোক্তা অধিকার দিয়ে চেষ্টা করা হয়। কখনও কখনও লোকবল কম হওয়ার কারণে এর গতি কিছুটা শ্লথ হয়।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রীর এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন,

গতকাল সংবাদ সম্মেলনের পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয়েছে। দেড় ঘণ্টার মতো তার সঙ্গেই ছিলাম। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো কথা হয়নি। আমরা মূলত জেল-জুলুম করে নয়, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে বাজার স্বাভাবিক করার পক্ষপাতী।

ডিমের দাম নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ডিমের দাম কত হওয়া উচিত এটি ঠিক করা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়, এ কথা বারবার বলা হয়েছে। যদি বাজারে ডিমের সরবরাহ সংকট দেখা দেয়, তাহলে আমদানির কথা ভাবা যেতে পারে। কিন্তু দাম ঠিক করার বিষয়টি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় না, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় করবে।

প্রসঙ্গত, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রতিপিস ডিমের দাম ঠিক করেছে ১২ টাকা। তবে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, এই দাম ঠিক করার ক্ষেত্রে সরবরাহ ব্যবস্থায় যে খরচ হয়, তা সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করা হয়েছে। প্রতিটি ডিম উৎপাদনেই খরচ হয় ১০ টাকা ৮০ পয়সা। এরপর স্থানীয় আড়তদার, শহরের আড়তদার, ভ্যানগাড়ির পাইকারি বিক্রয় এবং অবশেষে খুচরা বিক্রেতা হয়ে ভোক্তার হাতে ডিম যায়। এ ক্ষেত্রে ১২ টাকায় ডিম বিক্রি অসম্ভব। কম করে হলেও ডিমের দাম ১২ টাকা ২৫ পয়সা নির্ধারণ করা উচিত বলে মনে করেন তারা।

সংস্থাটির দাবি, সরকার চাইলেই ডিমের উৎপাদন খরচ ৮ টাকায় নামিয়ে আনতে পারে। যেসব করপোরেট প্রতিষ্ঠান বাজারে মুরগির খাবার বিক্রি করে, তাদের একাধিপত্য এবং সিন্ডিকেট ভেঙে দিলে ডিমের উৎপাদন খরচ কমে আসবে।

এদিকে বাণিজ্যমন্ত্রী বলছেন,

সিন্ডিকেট ভাঙা নয়, বরং সমঝোতার মাধ্যমে বাজার ব্যবস্থা পরিচালনা করবে সরকার। এ ধরনের অসামঞ্জস্যতার কারণে দিনকে দিন বাজারে অস্থিরতা বাড়ছে বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের।

Exit mobile version