মিঠুন গোস্বামী, রাজবাড়ী প্রতিনিধি।।
দেশের বৃহত্তম যৌনপল্লি রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনপল্লির প্রায় দুই শতাধিক যৌনকর্মরা তাদের নিরাপত্তা দাবি চেয়ে ইমরান হোসাইন নামে এক প্রতারকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে।
সোমবার (২৮ আগষ্ট) দুপুর বারোটার দিকে দৌলতদিয়া রেলস্টেশনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে। এসময় যৌনকর্মীরা জানান ইমরান হোসাইন নামে এক ব্যাক্তি দীর্ঘ সময় যৌনপল্লিতে বিভিন্ন মেয়ের ঘরে আসে এবং প্রশাসনের ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জনের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করে।
জানাযায়, ইমরান হোসাইন পতিতা পল্লীর বৈশাখী নামের একজনকে মামলার ভয় দেখিয়ে জোর করে বিয়ে করার অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া বৈশাখী যে বাড়িতে ভাড়া থাকতো সেই শেফালী বাড়ি ওয়ালী বৈশাখীর কাছে ভাড়া বাবদ একলক্ষ বিশ হাজার টাকা পাবে বলে অভিযোগ করে।
শেফালীর মেয়ে খুশি মানববন্ধনে বলেন, আমাদের টাকা না দিয়ে মামলা দেওয়ার ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবি করে। এবং মোহাম্মদ আলী নামে একজনকে পাঠায় জাল বায়না নামা দিয়ে বাড়ী দখল করতে পাঠায়, তখন আমরা থানায় খবর দেই। পুলিশ মোহাম্মদ আলীকে ধরে নিয়ে গেলে সে আমাদেরকে হুমকি দেয় আমার কতো ক্ষমতা দেখবি। ওসিকে আমি বদলি করে তারপর তোদের বাড়ী দখল করবো। এসমস্ত কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
এসময় শতশত যৌনকর্মী তার বিচারের দাবিতে শ্লোগান দিতে থাকে। এবং তাদের নিরাপত্তা নিয়ে শংকা প্রকাশ করে।
জানাযায় মোঃ ইমরান হোসাইন ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা থানার মোঃ হাবিবুর রহমান এর ছেলে। সে শিপিং এর ব্যাবসা করলেও এখন তেমন একটা ব্যাবসা বানিজ্য নেই। সে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জনের কাছ থেকে শিপ ভাড়া নিয়ে প্রতারনার মাধ্যমে বিক্রি করে। দেশের বিভিন্ন ধানায় তার বিরুদ্ধে আট দশটি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।
ইমরান হোসাইন তার স্বার্থ হাসিলের জন্য বিভিন্ন সময় গোয়ালন্দ ঘাট থানাসহ কোর্টে মামলা করে যৌনকর্মীদের হয়রানি করে। সে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় দুটি অভিযোগ করেন প্রথমটিতে যৌনকর্মী পিংকি গং এর বিরুদ্ধে নগদ ছয় লক্ষ টাকা এবং দ্বিতীয়টিতে এই পিংকি গং এর নিকট নয় লক্ষ টাকা এছাড়া মারধর করে টাকা আদায় ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয় উল্লেখ করে অভিযোগ করেন গত বছর ১৫ মে একটি এবং ২৬ মে আরেকটি। তদন্তে দুটি অভিযোগের কোন ভিত্তি বা প্রমাণ পায়নি গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ।
এ ব্যাপারে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, ইমরান হোসাইন বিভিন্ন সময় প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকতার নাম ব্যাবহার করে যৌনকর্মীদের হয়রানি করে আসছিল। তিনি থানায় যৌনপল্লির কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন পরবর্তীতে তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত করতে গিয়ে তার কোন সত্যতা পায়নি। তাছাড়া তিনি যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তাদের মধ্যে বৈশাখী নামের একজনকে তিনি বিয়ে করে সংসার করছেন। একজনের বাড়ী কিনেছেন সেটা দখল দারিত্ব নিয়ে ঝামেলা করলে পুলিশ মোহাম্মদ আলী নামে একজনকে আটক করে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠায়।