ফ্রান্সের সরকারি স্কুলগুলোতে মেয়েদের আবায়া বা বোরকা পরা নিষিদ্ধ। আগামী ৪ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে এ নিষেধাজ্ঞা।
সোমবার (২৮ আগস্ট) দেশটির শিক্ষামন্ত্রীর বরাত দিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
শিক্ষামন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল আটাল দেশটির টেলিভিশন চ্যানেল টিএফওয়ানকে বলেন, ‘একটি ক্লাসে গিয়ে শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের দিকে তাকিয়েই তাদের ধর্ম শনাক্ত করার বিষয়টি গ্রহণযোগ্য নয়। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, স্কুলে আর আবায়া বা বোরকা পরা যাবে না।’
ফ্রান্সের স্কুলগুলোতে বোরকা পরা নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে বিতর্কের পর দেশটির শিক্ষামন্ত্রী নতুন এ সিদ্ধান্ত নিলেন।
সাম্প্রতিক সময়ে ফ্রান্সের স্কুলগুলোতে বোরকাপরা মুসলিম মেয়েদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে, যা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভেদ দেখা দিয়েছে। ডানপন্থি দলগুলো মুসলিম নারীদের এ পোশাক নিষিদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিলেও বামপন্থি দলগুলো এ ক্ষেত্রে মুসলিম নারী ও মেয়েদের অধিকার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষতা মানে হল স্কুলের মাধ্যমে নিজেকে মুক্ত করার স্বাধীনতা, যেখানে বোরকা হলো একটি ধর্মীয় নিদর্শন।’
তিনি জানান, গ্রীষ্মের ছুটির পর স্কুল পুনরায় খোলার আগেই জাতীয় পর্যায়ে সবার কাছে তিনি নতুন নিয়মটি সুস্পষ্ট করবেন।
দেশটির সরকারি স্কুলগুলোতে ২০০৪ সাল থেকে মেয়েদের মাথায় স্কার্ফ বা হিজাব পরা নিষিদ্ধ ছিল। এরপর ২০১০ সালে দেশটিতে নিকাব (পুরো মুখ ঢেকে রাখা বোরকা) পরা নিষিদ্ধ করা হয়। সে সময় সরাকারের এমন সিদ্ধন্তে দেশটির ৫০ লাখের মুসলিম সম্প্রদায় ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছিল।
উনিশ শতক থেকেই ফ্রান্সে সরকারি স্কুল ও ভবনগুলোতে ধর্মীয় প্রতীক বা নিদর্শন ব্যবহারের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এক্ষেত্রে দেশটির যুক্তি হচ্ছে: ধর্মীয় প্রতীক বা নিদর্শনের ব্যবহার ধর্মনিরপেক্ষতার আইন লঙ্ঘন করে। এমনকি স্কুল শিক্ষার্থীদের ক্যাথলিক প্রভাব থেকে মুক্ত রাখতে খ্রিষ্টান ধর্মের প্রতীকে গলায় বড় ধরনের ক্রুশ পরাও নিষিদ্ধ।