ভারতের উত্তর প্রদেশে সহপাঠীদের দিয়ে মুসলিম শিক্ষার্থীকে চড় মারানোর ঘটনার পর ওই স্কুল বন্ধের নির্দেশ হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলাকালীন স্কুলটি বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে এই বিষয়ে নোটিশ পাঠিয়েছে রাজ্য শিক্ষা দপ্তর। খবর এনডিটিভির।
এদিকে বন্ধ থাকার কারণে ওই স্কুলের শিক্ষার্থীদের যেন পড়াশোনার ক্ষতি না হয়, সে জন্য তাদের আশেপাশের স্কুলগুলোতে ভর্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ওই নোটিশে। এতে শিক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তারা সহায়তা করবেন বলেও জাননো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) উত্তর প্রদেশের মুজাফফরনগরের নেহা পাবলিক স্কুলের একটি ভিডিও নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়। ভিডিওটিতে দেখা যায়, ক্লাসে নিজের চেয়ারে বসে আছেন ওই শিক্ষিকা। তার টেবিলের ডান পাশে দাঁড়িয়ে এক ছাত্র। শিক্ষিকা ক্লাসের অন্য ছাত্রদের ওই ছাত্রকে চড় মারার নির্দেশ দিচ্ছেন। আর এক এক করে এসে তার গালে চড় মারছে ছাত্ররা।
এ সময় ওই ছাত্রের চোখে পানি দেখা যায়। এখানেই শেষ নয়, ওই ছাত্রকে লক্ষ্য করে ইসলাম-বিদ্বেষী মন্তব্য করতেও শোনা যায়। শিক্ষিকা বলেন, ‘আমি জানিয়ে দিয়েছি, সব মুসলিম শিশুকেই স্কুল ছাড়তে হবে।’
এরপর ভিডিওর এক পর্যায়ে দেখা যায়, ওই শিক্ষিকা তার ছাত্রদের ওই শিক্ষার্থীকে আরও ‘জোরে’ চড় মারার জন্য বলছেন। এতে তার গাল লাল হয়ে গেলে তার কোমরে আঘাত করার জন্য বলেন তিনি। এই ঘটনায় হইচই পড়ে যায়, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও প্রতিবেদন হয়।
ঘটনার ভিডিও প্রকাশ করে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটি ভারতের একটি ঘটনার ভিডিও ফুটেজ। এতে এক শিক্ষিকাকে ৭ বছর বয়সী এক মুসলিম ছাত্রকে চড় মারতে তার অন্য ছাত্রদের নির্দেশ দিতে দেখা যাচ্ছে। এমনকি ধর্মের কারণে তাকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করার কথাও বলছেন। এ ঘটনায় দেশটিতে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
তবে এই বিষয়ে অভিযুক্ত ওই শিক্ষিকা তৃপ্তা ত্যাগী বলেন, ওই শিক্ষার্থী সেদিন হোম ওয়ার্ক করেনি, যার কারণে তিনি তার সহপাঠীদের তাকে চড় মারতে বলেন। কারণ, ওই শিক্ষার্থীর বাবা-মায়ের নির্দেশ ছিল ওর সঙ্গে কঠোর ব্যবহার করার। কিন্তু আমি যেহেতু প্রতিবন্ধী তাই আমি অন্যান্য শিক্ষার্থীদের নির্দেশ দিয়েছি তাকে চড় মারতে, যেন সে হোমওয়ার্ক করে নিয়ে আসে।
ভিডিওটিতে করা ইসলাম-বিদ্বেষী মন্তব্যের কথা উল্লেখ করে তিনি অভিযোগ করেন, বিষয়টিকে সাম্প্রদায়িকতার দিকে মোড় ঘোরানোর জন্য ভিডিওটিকে এডিট করা হয়েছে। তিনি বলেন, ক্লাসে ওই শিক্ষার্থীর চাচাতো ভাইও উপস্থিত ছিল। সেই এই ভিডিওটি ধারণ করেছে এবং পরে সেটি ভাইরাল করেছে।