এস এম আলতা হোসাইন সুমন, লালমনিরহাট।।
ভারতের গজলডোবা ব্যারাজের জলকপাট খুলে দিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তাছাড়াও ভারী বৃষ্টি পাত ও পাহাড়ি ঢলে বাংলাদেশ অংশের তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি আবারও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ জলকপাটের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে। এতে লালমনিরহাট জেলার পাঁচ উপজেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি ডুকে প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পরেছে বিশ হাজার মানুষ। তলিয়ে গেছে আমন ক্ষেতসহ সব ধরনের আবাদি জমি।
শনিবার (২৬ আগস্ট) সকাল ৯টায় দেশের বৃহত্তম সেচপ্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের দোয়ানী পয়েন্টে তিস্তার পানি রেকর্ড হয়েছে ৫২ দশমিক ২২ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও নদীতে পানি বাড়ছেই।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানির পরিমাপ কর্মে নিযোজিত নুরুল ইসলাম বলেন, আজ ভোর ৬টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমা ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এখন সামান্য কমেছে। তবে উজান থেকে কী পরিমাণ পানি আসছে বলা যাচ্ছে না। পানি আরও বারতে পাবে বলে আশংকা কারা হচ্ছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রাশেদীন ইসলাম তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন পাহাড়ি ঢল ও উজান থেকে নেমে আসা পানির কারনেই তিস্তা নদিতে পানও বাড়ছে।
তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাওযায় নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরের বসতবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। পানি বন্ধি হয়ে পরেছে প্রায় ২ হাজারেরই বেশি পরিবারের লোকজন। চরাঞ্চলে মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই রান্না করতে না পেরে শুকনো খাবার খেয়ে আছেন।
এদিকে পানির নিচের তলিয়ে গেছে আমন ক্ষেতসহ সব ধরনের ফসল পাশাপাশি গবাদি পশুপাখি নিয়ে বিপদে আছেন নদীপাড়ের মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, সিঙ্গামারী ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা, কালমাটি, পলাশী ও সদর উপজেলার রাজপুর, খুনিয়াগাছ বাগডোরা, গোকুণ্ডা ইউনিয়নসহ তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল তলিয়ে নতুন করে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।
দোয়ানী সাধুর বাজারের তিস্তাপাড়ের আমিলুল হক বলেন, ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করায় ঘর থেকে বের হতে পারছি না। রান্না করাও বন্ধ। গরু-ছাগল নিয়ে খুব কষ্টে আছি। হাতীবান্ধা উপজেলার চর গড্ডিমারী এলাকার আজিরন বেগম বলেন, তিস্তার পানি বাড়ায় বাড়ি ঘরে পানি ডুকে পরেছে রান্না বন্ধ।
গড্ডিমারী ইউনিয়নের নিজ গড্ডিমারী গ্রামের ইউপি সদস্য জাকির হোসেন বলেন, শুক্রবার থেকে তিস্তার পানি বেড়ে পাঁচটি ওয়ার্ডে প্রবেশ করেছে। চরাঞ্চলের মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। ঘরবাড়িতে পানি ঢোকায় অনেকেই বের হতে পারছেন না।
হাতীবান্ধার সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, তিস্তা নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ইউনিয়নে দুই হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানিবন্দি পরিবারগুলো ভোগান্তিতে পড়েছেন। এর আগে জুলাইয়ে তিস্তার পানি বেড়ে বন্যার সৃষ্টি হয়। পানি নামার পর ভাঙন দেখা দেয়।