শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি।
মোটর শ্রমিক আলতাবের ছেলে আলমগীর হোসেন। গত বছর দাখিল পাশ করেছে জিপিএ ৫ নিয়ে। এর পর ভর্তি হয় নাটোর সরকারি টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটে। কিন্তু কিছু দিন ক্লাস করে চলে আসে টাকার অভাবে। এরপর ভর্তি হয় স্থানীয় একটি টেকনিক্যাল কলেজে। কিন্তু অধ্যক্ষের প্রতারণার কারণে এবারে অংশগ্রহণ করতে পারছে না ১ম বর্ষের বোর্ড ফাইনাল পরীক্ষায়।
শুধু আলমগীর নয়। বগুড়ার শেরপুরে কল্যাণী টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজের ফয়সাল ও রাফসানের সাথে ঘটেছে একই ঘটনা। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে আলমগীর হোসেন কারগিরী শিক্ষা বোর্ডের রাজশাহী বিভাগীয় পরিচলাক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, গত বছর জিপিএ পাঁচ পেয়ে এসএসসি পাস করে, বগুড়ার শেরপুরর রাফসান এবং আলমগীর, ফয়সাল নামের তিন শিক্ষার্থী। এরপর ফয়সাল বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, রাফসান কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এবং আলমগীর নাটোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়। কিন্তু অভাবের কারণে তাদের পরিবার আর অর্থের যোগান দিতে পারে না। তখন তারা শেরপুরের কল্যাণী টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজে অধ্যক্ষের সাথে যোগাযোগ করে ভর্তির টাকা জমা দেয়। ওই তিন ছাত্র এইচএসসি (বিএম) ১ম বর্ষ পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য টাকাও পরিশোধ করেছে। সর্বশেষ গত ৭ আগস্ট পরীক্ষার প্রবেশপত্র বাবদ ১ হাজার টাকাও নিয়েছেন অধ্যক্ষ। কিন্তু ১২ তারিখে তারা জানতে পারেন তারা ওই কলেজের শিক্ষার্থীই না। ফলে আগামী ২৭ তারিখ থেকে অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি (বিএম) ১ম বর্ষ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারছে না তারা।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসলে টাকা ফেরৎ দিয়ে মিমাংশার চেষ্টা করছেন কলেজটির অধ্যক্ষ। ইতি মধ্যে তিনি তাদেরকে ৫ হাজার টাকা ও এসএসসির কাগজপত্রও ফেরৎ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী রাফসান জানায়, আমার কাছ থেকে ৮ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে ৫ হাজার টাকা ও কাগজপত্র ফেরৎ দেওয়া হয়েছে। যেহেতু আার জীবন থেকে একটি বছর নষ্ট হয়েছে, আমার পরিবার আর কোন জটিলতায় যেতে চাচ্ছে না।
অভিযোগকারি আলমগীর হোসেন জানায়, অধ্যক্ষ স্যার আমার যে ক্ষতি করেছন তা অপূরণীয়। বুধবার রাতে একটি অঙ্গীকার নামায় স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য আমার বাসায় গিয়েছিলেন। আমি স্বাক্ষর করি নাই। আমি তার উপযুক্ত বিচার ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ চাই।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন কল্যাণী টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুর রাজ্জাক। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, “বোর্ডের নিয়ম অনুসরন করেই ওই তিন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয়েছিল। কিন্তু বোর্ডের জটিলতার করণে তাদের রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব হয়নি। তাই আমার করার কিছু নেই।“
এ বিষয়ে ওই কলেজের গভর্ণিং বডির সভাপতি ও শেরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সানজিদা সুলতানা বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’