প্রদীপ রায় জিতু, বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি।।
উপজেলার শিবরামপুর উচ্চ এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় তথা ২টি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একই প্রধান গেটের নির্মান কাজ ও যাতাযাত বন্ধ করেছিল দুর্বৃত্তরা। পুলিশি হস্তক্ষেপে সাময়িক নিয়ন্ত্রণ। প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ উর্ধ মহলের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
প্রতিদিনের ন্যায় দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার শিবরামপুর হাইস্কুল ও প্রাইমারি স্কুলের ছাত্রছাত্রী শিক্ষক-কর্মচারীরা একই প্রধান ফটক দিয়ে প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে যাতাযাত করে।
কিন্তু গত ২০ আগষ্ট’২০২৩ সকালে তারা স্কুলে ঢুকতে গিয়ে দেখতে পান একই এলাকার মরহুম আব্দুল কাইয়ুমের ছেলে মঞ্জুরে খোদা, মরহুম হামিদুল হকের ছেলে হাবিবুর, হোসেন আলীর ছেলে রউফ, মৃত সোনা মিয়ার ছেলে তাজিমুল ইসলাম, ও মহিবুরের দুই ছেলে মোসাব্বির এবং মুজাহিদ সংঘবদ্ধ দলের নেতৃত্বে অজ্ঞাতনামা দূষ্কৃতি প্রকৃতির যুবকরা লাঠিসোটা নিয়ে ত্রাস সৃষ্টি এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।
দুষ্কৃতিকারীর দল বাঁশের খুটি পুতে রশিদ্বারা প্রবেশ পথ অবরুদ্ধ করে রাখে। ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে ছাত্রছাত্রী অনেক বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হয়। শিক্ষক কর্মচারীরা সীমানা প্রাচীর বিহীন স্কুলে অন্যান্য বিকল্প রাস্তায় প্রবেশ করে, অশান্ত পরিবেশে ভীতির মধ্যে কোন মতে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা অব্যাহত রাখেন।
সরকারি বরাদ্দে প্রধান ফটক নির্মান কাজ ইতোমধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছেন হাইস্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও শিবরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান সত্যজিৎ রায় কার্তিক। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান শিক্ষক মানিক চাঁদ বর্মন।
জনাব মানিক চাঁদ বর্মন জানান, সুনামধন্য এই বিদ্যাপিঠ উন্নয়নে সার্বক্ষণিক তিনি ও সম্মানিত ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবৃন্দ আন্তরিকভাবে কাজ করে চলেছে। কিন্তু সম্প্রতি দুর্বৃত্তের দল মঞ্জুরে খোদার নোংরামিতে মদদ দিয়ে নানা বিশৃংখলা তৈরীর অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
তারা গেট নির্মান ঠিকাদারের লোকজন কে মারপিট, তাদের মোটর সাইকেল ভাংচুর, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সহ শিক্ষকদের শারীরিক লাঞ্ছিত করাসহ নির্মান কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এমন অবস্থায় প্রধান শিক্ষক সভাপতির মাধ্যমে অফিসার ইনচার্জ বীরগঞ্জ থানা এবং গণমাধ্যম কর্মীসহ অন্যান্য সহযোগি সংস্থার সহায়তা কামনা করেন।
থানা পুলিশ ও পুলিশের গোয়েন্দা শাখার অফিসারগণ এবং সংবাদ কর্মিরা দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে, দুষ্কৃতিকারীরা অনেকে পালিয়ে যায়। কিন্তু নেতৃত্বদাতারা প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি’র বিরুদ্ধে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা সহ বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিতে থাকে।
মঞ্জুরে খোদা ও হবিরব বলেন, এই স্কুলের জমি দাতারা তাদের পুর্ব পুরুষ, কিন্তু তাদেরকে কোন মুল্যায়ন করা হয় না, কমিটিতে বা সভা সমাবেশে ডাকা হয় না। তাই তারা প্রতিবাদে লিপ্ত হয়েছে, তারা কাউকে তোয়াক্কা করে না, উচিত শিক্ষা দিয়ে ছাড়বে, যেখানে গেট নির্মানের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে, সেটা স্কুলের জমি নয় বলে তাদের দাবী। ঐ জমির তারা বৈধ ওয়ারিশ। ৪ জন দাতা শিবরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নামে ১ একর ৫০ শতাংশ জমি দান করেছেন এবং দীর্ঘদিন পর্যন্ত বিদ্যালয় চালু আছে।
প্রধান শিক্ষক আরও জানান, বিদ্যালয় এড়িয়ার মধ্যোকার বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় গাছ দুই দফায় আনুমানিক ৪ লাখ টাকায় বিক্রি করে আত্মসাত করেছে সাদাদ মাষ্টার ও মঞ্জুরে খোদা। এবারও এই গ্রুপটি তাদের ইন্দোনে চরম অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে, অসহনীয় বিশৃংখলা তৈরী করে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত করছে। প্রধান শিক্ষকের সত্য বক্তব্যের সাথে শতভাগ সহমত প্রকাশ করেছেন, ম্যানেজিং কমিটির সম্মানিত সভাপতি ও শিবরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান সত্যজিৎ রায় কার্তিক। তিনি বলেন কোন সংঘাতে জড়াতে চাই না। ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মহোদয়গনকে জানিয়েছি।
পুলিশ অফিসার এস আই নুরনবী রশি-বাশ দ্বারা অবরুদ্ধ মেইন গেট পুলিশ ও গ্রাম পুলিশের সহায়তার খুলে দিয়ে নির্বিঘেœ চলাচলের ব্যবস্থা করে দেন। কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে নাই।
এ ব্যপারে বীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিষয়টি আমার জানা আছে, হুট করে কোন জনগুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রাস্তা ঘাট বা মেইন গেট বন্ধ করা একেবারে বেআইনি, প্রথমবারের মতো সর্তক করা হলো, পরবর্তীতে কোন ছাড় নেই।