ভয়াল সেই ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে বিএনপি যুদ্ধক্ষেত্রের অস্ত্র ব্যবহার করেছিল বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (২১ আগস্ট) গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে আর্জেস গ্রেনেড ব্যবহার হয় যুদ্ধক্ষেত্রে, সেটি ব্যবহার হয়েছিল আওয়ামী লীগের ওপর। সেদিন যে বেঁচে গিয়েছিলাম, সেটাই অবাক হওয়ার বিষয়।’
তিনি বলেন,
সেদিন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়ার ভূমিকা কী ছিল, কেন পুলিশকে বাধা দিয়েছিলেন তিনি? এতে কী প্রমাণ হয়? খালেদা-তারেক গং যে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় জড়িত, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তদন্তেও সেটি বেরিয়ে এসেছে।
‘যারা উদ্ধার করতে এসেছিলেন, তাদের ওপর হামলা, কাঁদানে গ্যাস ও লাঠিচার্জ করা হয়। এখানেই প্রশ্ন, কেন তাদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। লাথি মেরে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল!’, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন,
এমন ঘটনা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে হতে পারে, এটা কল্পনাও করা যায় না। সেদিন পুলিশের ভূমিকা ছিল সন্দেহজনক। শুধু হত্যাকাণ্ড নয়, আলামত নষ্ট করে দেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুনের রাজনীতি বিএনপি করে, খালেদা জিয়া করে, এটা তো প্রকাশ্য দিবালোকের মতো মানুষের কাছে স্পষ্ট। ১৫ আগস্ট জিয়া জড়িত থাকায় মোশতাক সেনাপ্রধান বানিয়ে পুরস্কৃত করে। আমেরিকায় এফবিআই কর্মীকে ভাড়া করে জয়কে কিডন্যাপ করে হত্যার চেষ্টা করেছে বিএনপি।
বিএনপি নামক রাজনৈতিক দলের উত্থানই হত্যা ও ষড়যন্ত্র দিয়ে। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসার পর সারা দেশে আমাদের কর্মীদের হত্যা করা হয়। আর আমরা ক্ষমতায় আসার পর অগ্নিসন্ত্রাস করে তারা জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘যারা বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, আমাদের (যারা ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর স্বজন হারিয়েছিলাম) মানবাধিকার কোথায় ছিল? আমরা কেন বিচার থেকে বঞ্চিত ছিলাম?’
কাদের শেখানো বুলি মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলে? প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তো বিচার পাইনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মানবাধিকার নিশ্চিত করেছে। কেউ অপরাধ করলে তাকে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে।’
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারের রায় দ্রুত কার্যকর হওয়া উচিত। মূল হোতা তো বাইরে। মুচলেকা দিয়ে বাইরে চলে গেছে। সাহস থাকলে বাংলাদেশে আসে না কেন? আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, সেটি ব্যবহার করে বড় বড় কথা বলছে। সাহস থাকলে বাংলাদেশে আসুক।
খুনিদের রাজত্ব আর চলবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, জিয়া পরিবার মানে খুনি পরিবার। অন্যায় আল্লাহও সহ্য করবে না। আল্লাহর মাইর, দুনিয়ার বাইর। খুনিদের হাতে যেন আর মানুষকে নিগৃহীত হতে না হয়। খুনিরা যেন আর মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে।
‘এতো হামলার পরও আল্লাহ যখন বাঁচিয়েই রেখেছেন, মানুষের জন্য কাজ করে যাবো’, যোগ করেন শেখ হাসিনা।