ভয়াল ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে বেদিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (২১ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে তিনি এ শ্রদ্ধা জানান।
শেখ হাসিনা প্রথমেই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নির্মিত শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে সঙ্গে নিয়ে শ্রদ্ধা জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর আলোচনা সভায় যোগ দিতে মঞ্চে ওঠার আগে ২১ অগাস্ট হামলায় আহত কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ২০০৪ সালের এই দিনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। শেখ হাসিনাকে হত্যার মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতেই তৎকালীন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীরা হাওয়া ভবনে জঙ্গিদের সঙ্গে বৈঠক করে গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনা করে।
হামলায় নিজেদের সম্পৃক্ততা আড়াল করতেই মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত নষ্ট করতে কলকাঠি নাড়ে তৎকালীন সরকার, বিদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয় হামলায় জড়িতদের।
গ্রেনেড হামলার ১৯ বছর পরও আদালতের রায় কার্যকর হয়নি। ঘাতকদের বিচার এখনো দেখেনি সেদিন নিহতদের পরিবার। অনেক পরিবার জানেনও না কেন এখনও বিচার হচ্ছে না। শিগগিরই রায় কার্যকরের দাবি তাদের।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় আয়োজিত সমাবেশে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। হামলার পরপরই শেখ হাসিনাকে কর্ডন করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় তার তৎকালীন বাসভবন ধানমন্ডির সুধা সদনে।
২১ আগস্টের রক্তাক্ত হামলায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন ১৬ জন। পরে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ মোট ২৪ জন নেতাকর্মী প্রাণ হারান।
বীভৎস ওই ভয়াল গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমান ছাড়াও সেদিন নিহত হন ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রশীদ, হাসিনা মমতাজ রিনা, রিজিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), রতন শিকদার, মোহাম্মদ হানিফ ওরফে মুক্তিযোদ্ধা হানিফ, মোশতাক আহমেদ, লিটন মুনশি, আবদুল কুদ্দুছ পাটোয়ারী, বিল্লাল হোসেন, আব্বাছ উদ্দিন শিকদার, আতিক সরকার, মামুন মৃধা, নাসির উদ্দিন, আবুল কাসেম, আবুল কালাম আজাদ, আবদুর রহিম, আমিনুল ইসলাম, জাহেদ আলী, মোতালেব ও সুফিয়া বেগম। গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের সঙ্গে লড়াই করে ঢাকার মেয়র মোহাম্মদ হানিফসহ আরও কয়েকজন পরাজিত হন।