মিঠুন গোস্বামী, রাজবাড়ী প্রতিনিধি।।
রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার মোহনপুর বাজারে রাসেল আহমেদ নামে এক আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে সরকারি জায়গায় মার্কেট নির্মাণের।
রাসেল আহমেদ রাজবাড়ী জেলা পরিষদের সদস্য ইউসুফ হোসেনের ছেলে। তিনি উপজেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক ও মোহনপুর বাজারের সভাপতি। এছাড়াও তিনি কালুখালী সাব-রেজিস্টার অফিসে দলিল লেখক ও স্টাম্প ভেন্ডার সমিতির সাধারণ সম্পাদক। তার উপজেলা ব্যাপি কেবল নেটওয়ার্ক ব্যবসা রয়েছে।
অন্যদিকে তার বাবা ইউসুফ হোসেন এলাকায় প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত। তিনি জেলা পরিষদের সদস্য ও মাজবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
অভিযুক্ত রাসেল আহমেদ বা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা স্পষ্ট করে কিছু না বলায় বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। যদিও নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।
স্থানীয় কয়েক ব্যবসায়ী জানান, মোহনপুর বাজারের ১৮ শতাংশ জমির আট শতাংশ আগেই দখল হয়ে গেছে। বাকি ১০ শতাংশে গত প্রায় ২০ দিন ধরে মার্কেট নির্মাণ করছেন রাসেল। ওই ১০ শতাংশ জমি এখনও সরকারের নামে রেকর্ড রয়েছে।
জমির কাগজ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ১০ শতাংশ নাল হিসেবে চিহ্নিত করে সরকারের পক্ষে মালিক জেলা প্রশাসক বলে উল্লেখ রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মোহনপুর বাজারের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে বিশাল জায়গাজুড়ে মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে। নির্মাণাধীন মার্কেটের এক পাশ দিয়ে চলে গেছে রাস্তা। সামনে কিছু জায়গা খালি। তার সামনে বসতবাড়ি। বিপরীত দিকে মমিন মণ্ডল নামে এক ব্যবসায়ীর দোকানঘর।
তবে মোহনপুর বাজারে আওয়ামী লীগ নেতা রাসেল সরকারি জায়গায় মার্কেট নির্মাণ করছেন এটা নিজ চোখে না দেখলেও লোকমুখে শুনেছেন বলে জানান মাজবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম।
অন্যদিকে মাজবাড়ি ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান বলেন, ওই জমি রূপালী চক্রবর্তী নামে একজন রায় পেয়ে রাসেলের কাছে বিক্রি করেন। রূপালী চক্রবর্তী কে, কোথা থেকে কীসের রায় পেলেন– জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি এসব বিষয়ে তেমন কিছু জানেন না।
তিনি আরও বলেন, ভিপি জমি ছিল ৭৫ শতাংশ। তারা পেয়েছেন ৫৫ শতাংশ। বিএসে ৫৫ শতাংশ রেকর্ড হয়েছে। বাকিটা মিউটেশন বাদ দিয়েছে। সেটা সরকারি হয়নি। ৭০২ নম্বর দাগ এখনও সরকারি।
তাহলে সেখানে কীভাবে মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে– জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি সেখানে গিয়ে বিষয়টি দেখবেন। এরপর গত সোমবার তাঁকে আবার কল করা হলে তিনি ৭০২ নম্বর দাগের বিষয়টি এড়িয়ে বলেন, রাসেল ৭০৩, ৭০৪ ও ৭০৬ নম্বর দাগ নিয়েছেন। আবার ৭০২ নম্বর দাগের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, জমিটি মাপা হয়নি। মাপ দিয়ে দেখতে হবে। ‘স্যারদের’ সঙ্গে কথা বলেছেন। সার্ভেয়ার সময় দিলে মেপে দেখা হবে।
এ বিষয়ে কালুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ মো: সজিব বলেন, আজ ঘটনা স্থলে গিয়ে সার্ভেয়ার দিয়ে মাপা হলে মার্কেটের কিছু অংশ সরকারি জায়গায় পড়ে যায়। তবে মার্কেট নির্মাণকারীদের সার্ভেয়ার না থাকায় তারা সময় নিয়েছে।আপাতত নির্মাণ কাজ বন্ধ আছে। পরবর্তীতে সরকারি সার্ভেয়ার এবং নির্মাণকারীদের সার্বিয়ার সহ ফাইনালি মাপা হবে।
এ বিষয়ে রাসেল আহমেদ রবিবার বিকেলে মুঠোফোনে কথা হলে বলেন, ইউ এন ও, এসিল্যান্ড উপস্থিত থেকে মাপছে। সেখানে কোন সরকারি যাইগা নাই। আমাদের যাইগাতেই মার্কেট নির্মাণ করছি।