জোট বাঁধতে না বাঁধতেই ভাঙনের সুর ভারতে বিজেপিবিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’য়। দিল্লির লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে কংগ্রেস এবং আম-আদমি পার্টির মধ্যে দেখা দিয়েছে বিরোধ। এছাড়াও জোটের কয়েকজন নেতা বিজেপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ‘ইন্ডিয়া’ জোটের নেতৃত্ব নিয়েও চলছে অদৃশ্য টানাপোড়েন।
ভারতের রাজনীতিতে অনেকটা অপ্রতিরোধ্য ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। তবে সাম্প্রতিককালে মোদির সেই দুর্দম্য বিজেপিকে কিছুটা হলেও চাপে ফেলেছে বিরোধী ২৮টি দলের জোট ‘ইন্ডিয়া’। মহাসমারোহে সে জোট গঠন করা হলেও, দুই মাস না যেতেই জোটের মধ্যে বাজছে ভাঙনের সুর।
দিল্লিতে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে সাতটি আসনে প্রার্থীতা নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে কংগ্রেস ও আম-আদমি পার্টির মধ্যে। এ নিয়ে দু’দলের নেতাকর্মীরা একে অন্যের বিরুদ্ধে দিচ্ছেন পাল্টাপাল্টি বক্তব্য। এমন পরিস্থতিতে আগামী ৩১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর মুম্বাইতে অনুষ্ঠেয় জোট শরিকদের বৈঠকে আম-আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের অংশ নেয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
এদিকে, প্রশ্ন উঠছে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের প্রতি মহারাষ্ট্রের ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির নেতা শরদ পাওয়ারের বিশ্বস্ততা নিয়ে। সম্প্রতি তার ঘনিষ্ঠ অজিৎ পাওয়ার জোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। গুঞ্জন রয়েছে অজিতের মাধ্যমে শরদ পাওয়ারও বিজেপি’তে যোগ দিতে পারেন।
এছাড়াও জোটের অন্যতম সংগঠক, জনতা দল ইউনাইটেডের নেতা নিতিশ কুমার সবশেষ ব্যাঙ্গালুরুতে জোটের বৈঠকের পর অনেকটা নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় রয়েছেন। নিতিশকে বাদ দিয়ে কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের ‘চেয়ারপারসন’ করার চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন তার দলের সমর্থকরা।
অন্যদিকে, তৃনমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ‘ইন্ডিয়া’ জোটের চেয়ারপারসন হতে আগ্রহী নন বলে জানালেও, এরইমধ্যে তার দলের নেতাকর্মীরা মমতাকেই প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী করার দাবি তুলছেন। সম্প্রতি এক রাজনৈতিক সমাবেশে মমতা বন্দোপাধ্যায় ‘ইন্ডিয়া’ জোটে ভিন্ন ভিন্ন মতের উপস্থিতি নিয়ে কটাক্ষও করেছেন।
নেতৃত্ব কিংবা শরিকদের মধ্যে রাজনৈতিক আদর্শের ভিন্নতা ক্রমেই দৃশ্যমান হয়ে উঠছে ইন্ডিয়া জোটে। এসব সংকট সামনে রেখে বিজেপিকে হারাতে গঠন করা বিশাল জোট ‘ইন্ডিয়া’ আগামী বছর অনুষ্ঠেয় লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত কতটা সুসংহত থাকতে পারে, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।