গত ডিসেম্বরে যখন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে আল নাসর দলে ভেড়ায় তখনও কেউ ভাবতে পারেনি, কী হতে চলেছে সামনের দিনে। কয়েকমাস যেতে না যেতেই সৌদি পেশাদার লিগ হাজির হয়েছে ইউরোপের আতঙ্ক হিসেবে। একের পর এক তারকা ফুটবলারকে দলে টানছে লিগের দলগুলো। যার সবশেষ দৃষ্টান্ত ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার।
মাত্র ৩১ বছর বয়সে অখ্যাত সৌদি লিগের দল আল-হিলালে যোগ দিয়েছেন নেইমার। অনেকের মতেই এটাই সৌদি লিগের সেরা সাইনিং। যা সামনের দিনে বড় বড় তারকাদের সৌদি লিগে যোগ দিতে উদ্বুদ্ধ করবে। তবে নেইমারের আল-হিলালে যোগ দেওয়ার পেছনে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছেন অন্য একজন। লিওনেল মেসির সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকার পরও নেইমারের মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) প্রতি আকৃষ্ট না হয়ে সৌদি লিগে আসার পেছনে আছেন তার সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। পর্তুগিজ মহাতারকাই আল-হিলালে যোগ দেওয়ার অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বয়ং নেইমার!
নেইমার যখন বার্সেলোনায় যোগ দেন তখন রিয়াল মাদ্রিদের প্রাণভ্রমরা ছিলেন রোনালদো। প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মুখোমুখি হলেও কখনোই রোনালদোর সতীর্থ হিসেবে খেলার সুযোগ পাননি নেইমার। তবে পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ীর প্রতি মুগ্ধতা ছিল তার। যা তিনি স্বীকার করছেন অকপটে।
সান্তোসে উত্থানের পর বার্সেলোনা ও পিএসজির মতো শীর্ষসারির ক্লাবে খেলার পর মাত্র ৩১ বছর বয়সে আল-হিলালের মতো অখ্যাত ক্লাবে যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে নেইমার গত ডিসেম্বরে রোনালদোর পাগলাটে সিদ্ধান্তটাকেই দায় দিচ্ছেন। ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা ফুটবলারের আল নাসরে যোগ দেওয়াটা ফুটবল ইতিহাসের ‘বাঁকবদল’ হিসেবে দেখছেন নেইমার।
আল-হিলালে যোগ দিয়ে প্রথমবার সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে ব্রাজিল জাতীয় দলের সর্বোচ্চ গোলের মালিক বলেন, ‘এখানে যা হচ্ছে, আমি মনে করি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর জন্যই হচ্ছে। সবাই তো শুরুতে তাকে ‘পাগল’ বা এমন অনেক কিছুই বলেছে। এখন দেখুন লিগটা শুধু বড় হয়েই চলেছে।’
সৌদি লিগের প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়াটাকেও তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলেছেন নেইমার, ‘এই গ্রীষ্মে দলবদলের পর লিগটা অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতে যাচ্ছে। কারা কারা আসছে, তাদের নামগুলো একবার দেখুন। আমি মনে করি, প্রতিদ্বন্দ্বিতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণেই আমি এই লিগে যোগ দিয়েছি। চ্যালেঞ্জ আমাকে এগিয়ে নেয়। আমি এখানে এসেছি লিগটাকে আরও এগিয়ে নিতে।’
সৌদি লিগকে সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু বানাতে নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার অঙ্গীকারও করছেন নেইমার। তিনি বলেন, ‘সবাইকে জানিয়ে দিতে চাই, তাদের কাছে খেলাটাকে উপভোগ্য করে তুলতে আমি আমার সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করে যাব। আমাদের লক্ষ সব শিরোপা জয়।’
এই প্রজন্মের সেরা ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার নেইমার মনে করেন বিশ্বজুড়ে ভক্তরা সৌদি লিগের খেলা দেখবেন। তার স্বদেশিরাও খেলা দেখবেন বলেই তার বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘ব্রাজিলের প্রচুর মানুষ এই লিগের খেলা দেখবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমি আশা করছি, ব্রাজিলিয়ানরা ও অন্য সবাই এই লিগটার খোঁজখবর রাখবেন ও আল-হিলালকে সমর্থন যোগাবেন।’