অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযান চালিয়ে বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি এবং নগদসহ প্রায় এক বিলিয়ন সিঙ্গাপুর ডলারের (৭৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) অর্থ-সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেছে সিঙ্গাপুর পুলিশ। এছাড়া, এ ঘটনায় ১০ বিদেশি নাগরিককেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সিঙ্গাপুর পুলিশ ফোর্স (এসপিএফ) পরিচালিত এ অভিযান দেশটির ইতিহাসে অর্থ পাচারবিরোধী সবচেয়ে বড় অভিযানগুলোর একটি। সিঙ্গাপুরে এত বড় অভিযান বিরল, কেননা সেখানে অপরাধের হার বিশ্বে সবচেয়ে কম।
নগদ ১৭ মিলিয়ন সিঙ্গাপুর ডলার ছাড়াও অভিযানে জব্দ হওয়া জিনিসগুলোর মধ্যে বিলাসবহুল গাড়ি ও ডিজাইনার হ্যান্ডব্যাগও রয়েছে। এছাড়া রয়েছে গয়না, ঘড়ি, ইলেকট্রনিক ডিভাইস এবং ভার্চুয়াল সম্পদের তথ্যসহ বিভিন্ন নথি। এসব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বা নিষ্পত্তি আদেশের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এদিকে, এ অভিযানে এক নারীসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ, যাদের সবাই বিদেশি পাসপোর্টধারী। দলটি বিলাসবহুল বাংলোতে (জিসিবি) ও উন্নত কনডোমিনিয়ামে বসবাস করত এবং সবারই বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে।
সিঙ্গাপুর পুলিশ ফোর্স এক বিবৃতিতে বলেছে, মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) বিভিন্ন শহর ও রাজ্যজুড়ে একযোগে অভিযান চালানো হয়। যেসব এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ট্যাংলিন, বুকিত তিমাহ, অর্চার্ড রোপ, সেনটোসা ও রিভার ভ্যালি। অভিযানে ৫০টি গাড়িসহ ৯৪টি সম্পত্তি জব্দ করা হয়েছে। ৩১ থেকে ৪৪ বছর বয়সী ১০ জনকে অর্থ পাচার ও জালিয়াতির অপরাধে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা চীনা, তুর্কি, কম্বোডিয়ান এবং ভানুয়াতুর নাগরিক।
পুলিশ জানিয়েছে, আটক হওয়া এ দলটি অর্থ পাচারে জড়িত। পাশাপাশি, অনলাইন জুয়া খেলার সঙ্গেও তাদের যোগসূত্র রয়েছে। বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তাদের সন্দেহজনক লেনদেন দেখে গোয়েন্দাদের সন্দেহ হয়েছিল।
অভিযানের বিষয়ে ‘হোয়াইট-কলার’ অপরাধ তদন্তকারী পুলিশের বাণিজ্যিক বিষয়ক বিভাগের পরিচালক ডেভিড চিউ বলেছেন,
‘নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে সিঙ্গাপুরকে অপরাধীদের ব্যবহারের কোনো সুযোগ দেয়া হবে না। এই অপরাধীদের প্রতি আমাদের বার্তা বেশ সহজ। যদি আমরা আপনাদের ধরতে পারি, আমরা গ্রেফতার করব। যদি আমরা আপনাদের অবৈধ সম্পত্তি খুঁজে পাই, আমরা সেগুলো বাজেয়াপ্ত করব। আমরা আমাদের আইন মেনে আপনাদের মোকাবিলা করব।’
এক্ষেত্রে আরও ১২ ব্যক্তি তদন্তে সহায়তা করছে উল্লেখ করে পুলিশ বলছে, আরও ৮ জন পলাতক রয়েছে। তাদের ওয়ান্টেড তালিকায় রাখা হয়েছে।
দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং আর্থিক নিয়ন্ত্রক, দ্য মনিটারি অথরিটি অব সিঙ্গাপুর জানিয়েছে, যেসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সন্দেহজনক লেনদেন চিহ্নিত করা হয়েছে, সেসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।