চোখের পানিতে আরও একবার ফিফা নারী বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিল সুইডেন। দুই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানকে হারিয়ে ট্রফির দাবিদার বনে যাওয়া সুইডিশরা শেষ চারে হেরেছে মাত্র তৃতীয় আসর খেলতে আসা স্পেনের কাছে।
ইডেন পার্কে মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) সুইডেনকে ২-১ গোলে হারিয়েছে স্পেন। স্প্যানিশদের হয়ে জয়সূচক গোল দুটি করেন সালমা সেলেস্তে ও ওলগা ক্যারমোনা। সুইডিশদের হয়ে একটি গোল করেন রেবেকা ব্লোমকিউভিস্ট।
এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় এবং সবমিলিয়ে চতুর্থ বারের মতো সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে সুইডেন। এর আগে একবার রানার্স আপও হয়েছিল তারা। এখন পর্যন্ত নারী বিশ্বকাপের সবগুলো আসরেই খেলা হয়েছে তাদের। কিন্তু বার বারই শিরোপার খুব কাছে গিয়েও কপাল পুড়েছে তাদের।
সেমিফাইনালের লড়াইয়েও স্পেনের তুলনায় শক্তিশালী ছিল তারা। নারীদের ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে সুইডেনের অবস্থান তিনে। আর স্পেন অবস্থান করছে ছয়ে। তারওপর স্পেন এ নিয়ে মাত্র তৃতীয় বারের মতো বিশ্বকাপে পা রেখেছে। ২০১৫ সালে তারা গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়েছিল আর ২০১৯ বিশ্বকাপে রাউন্ড অব সিক্সটিন থেকে। সে স্পেন বিশ্বকাপের সবচেয়ে অভিজ্ঞ সুইডেনকে বিদায় করেই কিনা ২০২৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে পা রাখল।
ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এদিন আধিপত্য ছিল স্প্যানিশদেরই। পুরো ম্যাচে তারা ৬৩ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে ১৩টি শট নেয়। যার ২টি ছিল গোলমুখে এবং সেগুলোতে সফল তারা। বিপরীতে সুইডেনের নেয়া ৬ শটের ৩টি ছিল গোলমুখে। কিন্তু তারা সফলতার দেখা পায় মাত্র ১টিতে।
ছেলেদের মতো স্পেন নারী দলও খেলেছিল টিকিটাকা কৌশলে। আর সুইডেন লং পাসে। দুই দলের এ লড়াইয়ে প্রথম ৮০ মিনিট পর্যন্ত কেউই জালের দেখা পায়নি। যদিও ৭০ মিনিটে গোলের দারুণ সুযোগ ছিল স্পেনের সামনে। কিন্তু বারের কাছে বল পেয়ে জালে জড়াতে ব্যর্থ হন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড আলবা রেদোন্দো। সে আক্ষেপ ১০ মিনিট পর পূরণ করেন আগের ম্যাচে জয়ের নায়ক সালমা সেলেস্তে। দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নামা এ স্ট্রাইকার ডি-বক্সে বল পেয়ে দুই সুইডিশ ডিফেন্ডার ও গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়ান। এর আগে কোয়ার্টার ফাইনালে তার অতিরিক্ত সময়ে করা গোলে জয় পেয়েছিল স্পেন।
তবে এদিন সালমা একাই জয়ের নায়ক বনতে পারেননি। কারণ জয় থেকে স্পেন যখন মাত্র কয়েক মিনিট দূরে তখন ডি-বক্সে লিনা হার্টিগের হেড দখলে নিয়ে জোরালো শটে জালে জড়িয়ে সুইডেনকে সমতায় ফেরান রেবেকা। তবে সে সমতা এক মিনিটের বেশি স্থায়ী হয়নি। কর্নার থেকে তেরেসা অ্যাবেইরা ডি-বক্সের বাইরে অরক্ষিত থাকা ক্যারমোনার কাছে পাস দেন। সেখান থেকে দৃষ্টিনন্দন জোরালো শটে স্পেনকে আনন্দের জোয়ারে ভাসান এ লেফট ব্যাক। সেখান থেকে আর লড়াইয়ে ফিরতে পারেনি সুইডেন। যদিও নির্ধারিত সময় শেষে যোগ করা ৭ মিনিটের পুরোটাতে তাদের আধিপত্য ছিল।
আগামী ২০ আগস্ট ফাইনালে স্পেনের প্রতিপক্ষ দ্বিতীয় সেমিফাইনালে জয়ী দলের বিপক্ষে। বুধবার (১৬ আগস্ট) ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে শেষ চারে মোকাবিলা করবে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড।