জাকারিয়া শেখ, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি।।
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে যৌতুকের দাবিতে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার প্রধান আসামী আশেক আলীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ প্রাণকৃষ্ণ দেবনাথ সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানান,ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ প্রাণকৃষ্ণ দেবনাথের নিদের্শনায় এস আই জাহেদুল ইসলাম ও ইব্রাহীম খলিলের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সারারাত বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেন। পরে এক পর্যায়ে পুলিশের অভিযানকারী টিমটি সোমবার ভোরে উপজেলার ভাঙামোড় ইউনিয়নের নজরমামুদ এলাকার একটি বাঁশঝাড় থেকে তাকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, পাঁচ বছর আগে একই ইউনিয়নের পশ্চিম ধনিরাম গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে আশেক আলীর (২৮) এর সাথে প্রেম করে বিয়ে হয় মৌসুমী খাতুনের। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে মনছুর আলী বিয়ের সময় জামাইকে এক লক্ষ টাকা দেন।
কিন্তু জামাই আশেক আলী তার বাবা মাতার পরামর্শে বাবার বাড়ী থেকে আরও টাকা আনার জন্য মৌসুমীর উপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। মৌসুমী এতে অস্বীকৃতি জানালে তার উপর চলে মারধোর সহ অমানুষিক নির্যাতন চালাতেন। গত ৮ আগষ্ট সকালে আশেক আলী মৌসুমীকে বাবার বাড়ী থেকে টাকা আনার জন্য চাপ দিলে মৌসুমী অস্বীকৃতি জানায়। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আশেক আলী মৌসুমীকে বেদম মারধোর করে। খবর পেয়ে মৌসুমীর নানা জহুরুল ইসলাম, নানার ছোট ভাই জাহেদুল ইসলাম ও চাচা নাসির আলী গুরুতর আহত অবস্থায় মৌসুমীকে উদ্ধার করে ফুলবাড়ী হাসপাতালে ভর্তি করেন। ফুলবাড়ী হাসপাতালে
চিকিৎসার পর ১১ আগষ্ট পরীক্ষা- নিরীক্ষার জন্য তাকে লালমনিরহাট জেলা সদরে নেয়া হয়। সেখানে পরীক্ষা- নিরীক্ষা শেষে ১২ আগষ্ট বিকাল সাড়ে ৪ টায় আবারও তাকে ফুলবাড়ী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দিবাগত রাত ২ টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মৌসুমী খাতুন। নিহত গৃহবধুর নাম মৌসুমী খাতুন (২৫)। তিনি উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পুর্ব ধনিরাম গ্রামের মনছুর আলীর মেয়ে।
ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ প্রাণকৃষ্ণ দেবনাথ জানান, গৃহবধুর চাচা নাসির আলী বাদী হয়ে স্বামী আশেক আলীসহ তিন জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীকে কুড়িগ্রাম কারাগারে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। সেই সাথে বাকি আসামীদের
গ্রেফতারের চেষ্টা তৎপরতা রয়েছে।