সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে দৃষ্টিনন্দন আর্চ সেতু নির্মাণ কাজ শুরুর পাঁচ মাস পার হলেও নেই কাজের অগ্রগতি। এছাড়া, নদীর পানি বাড়লে তলিয়ে যায় বিকল্প সড়ক ও সেতু। ঝুঁকি নিয়ে বিকল্প সেতু দিয়ে পার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। তবে, দ্রুতই সেতু নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা জানায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ।
জানা গেছে, জগন্নাথপুর শহরের মধ্যভাগ দিয়ে প্রবাহিত নলজুর নদী জগন্নাথপুর শহরকে দুই ভাগ করে রেখেছে। পূর্ব ও পশ্চিম অংশ যাতায়াতের জন্য অনেক বছর আগে উত্তর ও দক্ষিণ অংশের মধ্যে দুটি সরু সেতু নির্মাণ করা হয়। সেই পুরানো জরাজীর্ণ দুই সেতু দিয়ে নদীর দুপাড়ের লোকজন ও যানবাহন চলাচল করায় প্রতিদিন সৃষ্টি হতো যানজটের। এই সমস্যা নিরসনে দক্ষিণ অংশের পুরানো সেতু ভেঙে নতুন সেতু তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদফতর। গত মার্চ মাসে সেতুর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি।
দৃষ্টিনন্দন এই আর্চ সেতুতে থাকবে ফুটপাত ও লাইটিং। রাজধানীর হাতিরঝিলের নকশায় সেতুর নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘ভাটি বাংলা এন্টারপ্রাইজ’। তবে ধীরগতিতে কাজ চলছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
এদিকে, ডাকবাংলা রোডের নড়বড়ে জরাজীর্ণ সরু সেতু ও বিকল্প সড়ক সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে লোকজন। সাময়িক সমস্যা নিরসনে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নির্মাণাধীন সেতুর পাশে বাঁশের সেতু তৈরি করা হচ্ছে। তাই দ্রুত আর্চ সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ করার দাবি জানান এলাকাবাসী।
উপজেলার ইছহাকপুর গ্রামের রশিদ মিয়া বলেন, ‘বিকল্প সড়ক সঠিকভাবে নির্মাণ না করায় সামান্য বৃষ্টিতে তলিয়ে যায়। ফলে সমস্যায় পড়তে হয়।’
কলকলিয়া গ্রামের আব্দুল মতিন বলেন, ‘বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি। এই দুই মাস কাজ করলে সেতুর কাজ দ্রুত হত। তখন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ না করায় সেতু নির্মাণে ধীরগতির সৃষ্টি হয়েছে।’
তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইট ম্যানেজার সাইফুল আলম বলেন, ‘পুরানো সেতু এলাকায় বিদ্যুতের তার ও পুল অপসারণ করতে সময় লেগেছে; তাই সেতুর কাজ শুরু করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।’
আর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বিদ্যুতের তার সরানোর জন্য কাজের মূল সময় চলে গেছে। তারপরেও দ্রুত সময়ে সেতুর কাজ শেষ করা হবে।’
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘বিকল্প সড়ক দিয়ে মানুষ ও যানবাহন চলাচলে যানজটের সৃষ্টি হয়। নলজুর নদীর পানি বাড়লে তলিয়ে যায় বিকল্প সড়ক ও সেতু। এ সমস্যা নিরসনে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে একটি বাঁশের অস্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এটি দিয়ে শুধু লোকজন চলাচল করবে।’
উল্লেখ্য, ১৩ কোটি ৪৩ লাখ ৮৫ হাজার ৫০০ টাকা ব্যয়ে নলজুর সেতুর মধ্যভাগে ৬০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১১.২৫ মিটার প্রস্থ এই আর্চ সেতুর নির্মাণ কাজ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর।