তোশাখানা মামলায় ইমরান খান গ্রেফতার হওয়ার চার দিনের মাথায় রাষ্ট্রীয় কোষাগারে থাকা সব উপহার নিলামে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।
পাকিস্তানভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম এআরওয়াই নিউজ জানিয়েছে, সম্প্রতি কাউন্সিল অব পাকিস্তান নিউজপেপার এডিটরস (সিপিএনই), অল পাকিস্তান নিউজপেপার সোসাইটি (এপিএনএস) এবং পাকিস্তান ব্রডকাস্টার অ্যাসোসিয়েশনের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনার সময় এ ঘোষণা দেন শাহবাজ।
তিনি জানান, তোশাখানার উপহার বিক্রি করে যে টাকা আসবে তা গরীব ও অসহায় মানুষের জন্য ব্যবহার করা হবে।
শাহবাজ বলেন, ‘আমি তোশাখানায় থাকা লাখ লাখ রুপি মূল্যের সব উপহার নিলাম করার ঘোষণা করছি। তবে এর পুরো টাকা কল্যাণ সংস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো এতিম শিশুদের প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোথাও যাবে না। এই অর্থ আমরা একটি সংস্থার অধীনে হস্তান্তর করব যাতে এতিমদের সহায়তা করা যায়; যারা জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারে না।’
তিনি গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের আরও বলেন,
বর্তমান সরকার উত্তরাধিকারসূত্রে অত্যন্ত কঠিন অর্থনৈতিক অবস্থার মুখে পড়েছে। জোটের দলগুলো পরিস্থিতির ভয়াবহতা কল্পনাও করেনি।
এর আগে, তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় গত শনিবার (৫ আগস্ট) পাকিস্তানের প্রধান বিরোধী দল তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে তিন বছর কারাদণ্ডের রায় দেন আদালত। এছাড়া তাকে সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ থেকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়। পরে ইমরান খানকে গ্রেফতার করা হয়।
২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ইমরান খান। গত বছরের এপ্রিলে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের মধ্যদিয়ে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরপরই তার বিরুদ্ধে কয়েকটি দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। তার মধ্যে রাষ্ট্রীয় উপহারের মালামাল বিক্রির অভিযোগ অন্যতম, যাকে তোশাখানা দুর্নীতি বলা হচ্ছে।
তোশাখানা এমন একটি ভান্ডার যেখানে রাষ্ট্রের বিভিন্ন ধরনের মূল্যবান উপহারসামগ্রী সংরক্ষিত থাকে। কোনো দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধান কিংবা খ্যাতিমান ব্যক্তিদের দেয়া উপহার সামগ্রী এই তোশাখানায় সাজিয়ে রাখা হয়।
পিটিআই প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে বিভিন্ন দেশ সফরকালে পাওয়া রাষ্ট্রীয় উপহারসামগ্রী ব্যক্তিগতভাবে কিনে নেয়া ও সেগুলো বিক্রি করে দেয়ার ক্ষেত্রে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন তিনি। তবে শুরু থেকেই এমন অভিযোগ নাকচ করে আসছেন ইমরান খান।