রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পশ্চিমা বিশ্বের নানা নিষেধাজ্ঞার কবলে রাশিয়া। তা সত্ত্বেও দেশটিতে জুলাই মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় গাড়ি বিক্রি বেড়েছে প্রায় তিনগুণ।
সোমবার (৭ আগস্ট) পরিসংখ্যান বিষয়ক সংস্থা অটোস্ট্যাটের তথ্যের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রাশিয়ান সংবাদমাধ্যম আরটি।
এতে বলা হয়, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পশ্চিমা বিশ্ব। তবে চলমান নানা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই জুলাই মাসে রাশিয়ায় বেড়েছে গাড়ি বিক্রির পরিমাণ।
অটোস্ট্যাট জানায়, জুলাই মাসে রাশিয়ার গাড়ি বিক্রি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। মূলত দেশটির অটোমোবাইল খাত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা অব্যাহত রাখায় বিক্রি বেড়েছে।
পরিসংখ্যান বলছে, জুলাই মাসে রাশিয়ায় নতুন যাত্রীবাহী গাড়ি বিক্রি হয়েছে ৯৫ হাজার ৬৫৪টি। যা ২০২২ সালের জুলাই মাসের তুলনায় ২ দশমিক ৭ গুণ বেশি। ২৭ হাজার ৩৭৬টি গাড়ি বিক্রি করে শীর্ষে রয়েছে রাশিয়ান অ্যাভটোভাজের লাডা সিরিজের গাড়ি। গত বছরের তুলনায় প্রতিষ্ঠানটির গাড়ি বিক্রি বেড়েছে ১৬৩ শতাংশ।
উল্লেখ্য, অ্যাভটোভাজ রাশিয়া ও পূর্ব ইউরোপের বৃহত্তম গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা। প্রতি বছর প্রতিষ্ঠানটি এক মিলিয়নেরও বেশি যানবাহন উৎপাদন করে।
রাশিয়ার জনপ্রিয় ব্র্যান্ড চেরি ১০ হাজার ৭৩৫টি গাড়ি বিক্রি করে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির বিক্রি বেড়েছে ৩১৬ শতাংশ। এছাড়া ২৭৮ শতাংশ বিক্রি বৃদ্ধি পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে গিলি। প্রতিষ্ঠানটি জুলাই মাসে গাড়ি বিক্রি করেছে ৮ হাজার ৭৮৫টি। গাড়ি বিক্রিতে সেরা ৫টি প্রতিষ্ঠানের তালিকায় আরও রয়েছে হাভাল এবং চাঙ্গান।
এদিকে চলতি বছরের প্রথম ৭ মাসে দেশটিতে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় গাড়ি বিক্রি বেড়েছে ২৮ দশমিক ২ শতাংশ। জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত দেশটিতে বিক্রি হয়েছে ৪ লাখ ৯৭ হাজার ২৩০টি গাড়ি।
এর আগে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর পশ্চিমা দেশগুলো মস্কোর ওপর দফায় দফায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ফলে একে একে বড় প্রতিষ্ঠান দেশটির বাজার ছেড়ে চলে গেছে। যার মধ্যে রেনল্টের মতো হাই-প্রোফাইল পশ্চিমা অটো নির্মাতা প্রতিষ্ঠানও অন্তর্ভুক্ত। রাশিয়ার গাড়িশিল্প আগে থেকেই পশ্চিমা বিনিয়োগ ও উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন সরঞ্জামের ওপর নির্ভরশীল ছিল। কাজেই নিষেধাজ্ঞার কারণে খাতটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
গত বছর দেশটিতে গাড়ির যন্ত্রাংশের এতটাই ঘাটতি দেখা দেয় যে একপর্যায়ে দেশটির প্রধান গাড়ি উৎপাদক অ্যাভটোভাজ এয়ারব্যাগ বা অ্যান্টি-লক ব্রেকিং সিস্টেম (এবিএস) ছাড়াই গাড়ি বিক্রি করেছে।
তবে ধীরে ধীরে স্থানীয় বাজারে দেশীয়ভাবে উৎপাদিত গাড়ির চাহিদা বাড়ছে বলে জানিয়েছে অ্যাভটোভাজ।