যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর কথা বলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রতারক আবুল কাশেম চক্র আবারও মাঠে। গ্রেফতারের চার মাসের মাথায় জামিন! বের হয়ে ফের একই কাজ! ৬ জনকে গ্রেফতারের পর গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, জাল কাগজপত্র তৈরি করে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সেমিনারে অংশ নেয়ার কথা বলে কয়েকশ লোকের সঙ্গে প্রতারণা করেছে চক্রটি।
গত ৩ এপ্রিল রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেফতার করে আবুল কাশেমকে। পুলিশ জানায়, কাশেম আন্তর্জাতিক মানব পাচার চক্রের সদস্য। জাল কাগজপত্র তৈরি করে কথক একাডেমি নামে একটি এনজিও থেকে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদে (ইকোসক) প্রতিনিধি পাঠানোর নামে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেন কাশেম চক্র। মামলা করেছিলো ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস। তিন দফায় ধরা পড়ে এ চক্রের দশজন।
চার মাস না পেরুতেই জামিন নিয়ে বেশিরভাগ এখন আবার মাঠে। চলছে একই কাজ। এবার আলাদা অভিযানে গ্রেফতার হয়েছে ছয়জন। সবাই আবুল কাশেমের লোক।
বাংলাদেশ ইকোসকের অন্যতম সদস্য। সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও সংস্থাটির বিভিন্ন সেমিনারে অংশ নিয়ে থাকে। এ সুযোগটিই কাজে লাগায় চক্রটি। ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে এনজিওর প্রতিনিধি পাঠানোর নামে তারা মার্কিন দূতাবাসে পাসপোর্ট জমা দেন। জাতিসংঘে জমা দেয়া কাগজপত্র এবং দূতাবাসে জমা দেয়া পাসপোর্টের তথ্য পর্যালোচনা করে প্রতারণার বিষয়টি ধরা পড়ে। এখন পর্যন্ত মার্কিন দূতাবাস এ সংক্রান্ত চারটি মামলা করেছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. হারুন অর রশিদ বলেন, তারা যাদের কাছ থেকে পাসপোর্ট নেয় তাদেরকে বলে, ‘তোমরা ২০/৩০ লাখ করে টাকা দিবা। আমরা তোমাদের আমেরিকায় পৌঁছে দেবো। সেখানে গিয়ে আর আসার দরকার নাই, তোমরা তোমাদের মতো থাকবা।’ এভাবেই কাশেম চক্রটি মানব পাচার করছে।
পুলিশ বলছে, কয়েকশ লোক তাদের হাতে প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
হারুন অর রশীদ বলেন, ‘চক্রটির মাধ্যমে শত শত লোক চলেও গেছে। অনেকে যেতে পারেনি। অনেকের কাছ থেকে তারা টাকাও নিয়েছে। আমরা সবকিছু মিলিয়ে তদন্ত করছি। আমরা কিন্তু মানুষকে আগেও সতর্ক করেছি যে, এ রকম ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে, ভুয়া তথ্য দিয়ে আমেরিকায় যাওয়া অনেক রিস্কি ‘
গোয়েন্দারা বলছেন, জেনেশুনে অবৈধ উপায়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দিতে গিয়ে যারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন তাদেরকেও এবার আনা হবে আইনের আওতায়।