ফুটবলের পরাশক্তি ধরা হয় ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনাকে। কিন্তু খেলোয়াড় হিসেবে বর্তমানে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো এবং লিওনেল মেসি ফুটবলের পরাশক্তি। এই দুই তারকার প্রসঙ্গ আসলে ফুটবল যেন এক ভিন্ন মাত্রা পায়।
কাতার বিশ্বকাপের পরে ইউরোপের ফুটবল ছেড়ে এশিয়ার ক্লাব আল-নাসরে যোগ দেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ফুটবলের মহাতারকার এমন কাণ্ড দেখে অবাক হয়েছিল ফুটবল বিশ্ব। অবশ্য কিছুদিন পরে এটিই ‘ট্রেন্ড’ হিসেবে ধরা দেয়। রোনালদোর পথ অনুসরণ করে সৌদি আরবে পাড়ি জমান করিম বেনজেমা, কালিদু কোলিবালি, এনগালো কান্তে, রবার্তো ফিরমিনো, ফাবিনিও, জর্ডান হেন্ডারসন, সাদিও মানেসহ আরও অনেকে।
অবশ্য জুনে আরেক মহাতারকা লিওনেল মেসিও ইউরোপ ছাড়ার ঘোষণা দেন। তিনি পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে। যেখানকার টুর্নামেন্টের নাম মার্কিন লিগ সকার (এমএলএস)। আর রোনালদোদের টুর্নামেন্ট সৌদি প্রো লিগ। যদিও প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, মেসি সৌদি প্রো লিগের ক্লাবে আল-হিলালে যাচ্ছেন, কিন্তু পরবর্তীতে বিশ্বকাপজয়ী তারকার এক ঘোষণায় সবকিছু স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
এ দিকে মার্কিন মুলুকে মেসির পরে যোগ দেন সার্জিও বুসকেটসসহ আরও অনেকে। সেখানে যোগ দেয়ার পথে রয়েছেন আরও কয়েকজন ফুটবল তারকা। যদিও সৌদি লিগের মতো এখনও জমজমাট হয়ে উঠতে পারেনি এমএলএস, তবে মেসি একাই যেন সেটিকে রাঙানোর দায়িত্ব নিয়েছেন।
আল-নাসরে যোগ দেয়ার পরে পিএসজির বিপক্ষে রিয়াদ অল স্টারের ম্যাচ বাদে রোনালদো নিজেকে চেনাতে বেশ সময় নিয়েছেন। যেখানে মেসি মায়ামিতে যোগ দিয়েই জীবন্ত করে তুলেছেন প্রিয় অঙ্গনকে। প্রথম তিন ম্যাচে ৫ গোল ও ১ অ্যাসিস্ট করে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের পছন্দের শীর্ষে জায়গা করে নিয়েছেন লিওনেল মেসি। যে জায়গাটিতে বেশ সময় নিয়েছেন রোনালদো। এ হিসেবে মেসি এগিয়ে রয়েছেন রোনালদো থেকে।
তবে মেসি কেবল মায়ামিকে রাঙিয়ে তুললেও এমএলএস এখনও সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেনি। যদিও টুর্নামেন্টটিতে এখনও খেলার সুযোগ হয়নি মেসির। যে তিন ম্যাচ তিনি খেলেছেন সেগুলো ছিল লিগস কাপে। এ দিকে মায়ামি বাদে অন্য ক্লাবগুলোতে রয়েছে তারকার ঘাটতি। যেখানে এগিয়ে রয়েছে সৌদি প্রো লিগ। এছাড়া রোনালদো নিজের সেরাটা বের করে আনার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিছু ম্যাচে নিজের জাতও চিনিয়েছেন তিনি।
সবমিলিয়ে মেসির এমএলএস এবং রোনালদোর সৌদি প্রো লিগ এগিয়ে যাচ্ছে দুর্বার গতিতে। বিষয়টি নিয়ে ভ্রু কুচকানোর মতো অবস্থা হয়েছে ইউরোপীয় টুর্নামেন্টগুলোর। ইতোমধ্যে পেপ গার্দিওলা এবং ইয়ুর্গেন ক্লপ সেটি নিয়ে সতর্কতার কথাও বলেছেন। তবে এ বিষয়ে এখন কর্ণপাতের সময় নেই রোনালদো কিংবা মেসির। তারা এই মুহূর্তে নিজেদের টুর্নামেন্টকে রাঙিয়ে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে কোন টুর্নামেন্ট সেরা? সে প্রশ্নের উত্তর সময়ই বলে দিবে। আপাতত ভক্তরা দুই টুর্নামেন্টেই নজর রেখেছেন।