তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় আদালতের রায়ের পরই গ্রেফতার হয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধামন্ত্রী ইমরান খান। শনিবার (৫ আগস্ট) তাকে লাহোরের জামান পার্কের বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে ইসলামাবাদে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পর থেকেই বিভিন্ন মহলে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশটির সাবেক অনেক প্রধানমন্ত্রীর মতো ইমরানকেও আসন্ন জাতীয় নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে এ পদক্ষেপ নিয়েছে ক্ষমতাসীন শাহবাজ প্রশাসন ও সামরিক বাহিনী। কারাগারে বন্দি থাকলেও ইমরান খান আগামী নির্বাচনে প্রতিপক্ষের মাথাব্যথার কারণ হতে পারেন।
পাকিস্তানের রাজনীতিতে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে ছড়ি ঘুরিয়ে আসছে দেশটির সেনাবাহিনী। বিশ্লেষকের মতে, ২০১৮ সালের নির্বাচনে ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পেছনেও ছিলো সেনাবাহিনীর আশীর্বাদ। তবে, সময় ঘুরতেই ইমরানের সঙ্গে শুরু হয় তাদের টানাপোড়ন। পরবর্তীতে ২০২২ সালে পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথমবার পার্লামেন্টে বিরোধীদের অনাস্থার মুখোমুখি হয়ে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব ছাড়তে হয় ইমরানকে।
ক্ষমতা হারানোর পর দুর্নীতি, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমে মদদ দেয়াসহ দেড়শর বেশি মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। এর ধারাবাহিকতায় শনিবার তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় রায় ঘোষণা করেন আদালত। রায়ের পরপরই লাহোরের নিজ বাসভবন থেকে গ্রেফতার করা হয় তাকে। এরপর ইমরান খানকে নেয়া হয় কারাগারে।
এদিকে, ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ জানিয়েছে, এরই মধ্যে আদালতের এ রায়ের বিরুদ্ধে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে আপিল করা হয়েছে।
গেল তিন মাসে এ নিয়ে দুবার গ্রেফতার হলেন পাকিস্তানের বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তবে, এবারই প্রথম কোনো মামলার রায়ের পর গ্রেফতার হলেন তিনি। তাই এবার আর সহজেই ইমরান ছাড়া পাচ্ছেন না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে, পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন শাহবাজ সরকারের তথ্যমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব দাবি করেছেন, ইমরানকে গ্রেফতারের সঙ্গে আসন্ন পার্লামেন্ট নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। আইনিভাবে ইমরানের অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে এ সাজা দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মরিয়ম আওরঙ্গজেব আরও বলেন, ইমরান খানকে রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে যদি কেউ মনে করে তাহলে ভুল করা হবে। কারণ, দীর্ঘ চৌদ্দ-পনেরো মাসের তদন্ত শেষ করে বিচারিক প্রক্রিয়ায় আদালত ইমরান খানের বিরুদ্ধে এ রায় দিয়েছেন।