আবুল মোমেন, রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি।।
আইন ভেঙ্গে নিকাহ্ ও তালাক রেজিষ্টার ও কাজীর সহযোগী হিসাবে অনুমতি প্রদান করলেন কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক। ৬ জুলাই ইউনিয়ন পরিষদের প্যাডে স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
জানা গেছে, ২০১৭ সালে সাইফুল ইসলাম রৌমারী সদর ইউনিয়ন বিবাহ রেজিষ্টার হিসাবে নিয়োগ পান। কিন্তু তার নিকট আত্মীয় সাবেক এমপি গোলাম হোসেনের পুত্র সাখওয়াত হোসেন লিপন অবধৈবাবে নিকাহ রেজিষ্টারের কাজ করে আসতো। অভিযোগ আছে, এজন্য তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে দালাল নিযুক্ত করেন। কাজীর অজান্তেই, গ্রামের অপ্রাপ্ত বয়সী ছেলে-মেয়েদের বিবাহ নিবন্ধন করাতেন। পরে বিভিন্ন উকিলের জাল স্বাক্ষরে তৈরি করতেন ভুয়া কাগজ পত্র। পরবর্তিতে বিবাহ নিয়ে কোন জটিলতা তরি হলে আইনের আশ্রয় নিতে পারছেন না ভুক্তভোগীরা।
আরও পড়ুন
-
- রাজবাড়ীতে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী, ২৪ ঘন্টায় ৩২ জন ভর্তি
এবিষয়ে নিবন্ধিত কাজি সাইফুল ইসলাম গত কয়েক মাস আগে সাখাওয়াত হোসেন লিপনের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু কোন আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পরিবর্তে গত ৬ জুলাই সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক তাকে কাজির সহযোগী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এর পর লিপন রৌমারী ইউনিয়নের সকল এলাকায় লিফলেট পোষ্টার লাগিয়েছেন। ফলে বাল্যবিবাহ উৎসাহিত হচ্ছে বলে উদ্বেগ জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
এনিয়ে গত ২৬ জুলাই উপজেলার মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় অবৈধভাবে নিকাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রার বিষয়ে আলোচনা হলেও ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
এবিষয়ে সাখাওয়াত হোসেন লিপন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমাকে নিকাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রার হিসাবে কাজ করার লিখিত অনুমতি দিয়েছেন। তাই আমি এলাকায় বিবাহ রেজিষ্টার করে আসছি।
রৌমারী সদর ইউনিয়ন নিয়োগ প্রাপ্ত কাজি সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি কাউকে সহযোগী কাজি হিসাবে নিয়োগ দেইনি এবং আইনেও নেই।
এ বিষয়ে রৌমারী সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আইন মেনেই লিপনকে সাময়িক নিকাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রার হিসাবে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ হাসান খান বাংলাদর্পনকে বলেন, “আইন অনুযায়ী জেলা রেজিস্টার বিবাহ নিবন্ধনকের (কাজী) লাইসেন্স প্রদান করবেন। কাজী ব্যাতীত অন্য কেউ বিবাহ নিবন্ধন করতে পারবে না। ইউপি চেয়ারম্যান যদি কাউকে নিবন্ধক সহযোগী হিসেবে নিয়োগ দিয়ে থাকেন তা বেআইনী। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”