বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে মামলার রায়ের সঙ্গে আগামী নির্বাচনের কোন সম্পর্ক নেই বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সরকারের ইচ্ছামতো এ রায় দেয়া হলে আরও আগেই হতে পারতো বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন তিনি।
বিএনপিকে নেতৃত্ব শূন্য করতে নির্বাচনের আগে তারেক ও জোবাইদাকে সাজা দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। এ নিয়ে এক প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এই মামলা দায়ের করেনি। সরকার যদি স্বপ্রণোদিত হয়ে কোনো কিছু করতো তাহলে এই মামলার রায় হওয়ার জন্য তো সাড়ে ১৪ বছর অপেক্ষা করতে হতো না।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন তো এর আগেও দুটো হয়েছে, আমরা ক্ষমতায় থাকাকালীন। এটার সঙ্গে নির্বাচনের তো কোনো সম্পর্ক নেই, আমাদের সরকার প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে মোটেই করেনি। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বিচার হয়েছে, বিচারের রায় হয়েছে।’
তারেক ও জোবাইদার সাজার প্রসঙ্গ টেনে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি সাথে সাথে সংবাদ সম্মেলন করে কর্মসূচি দিয়েছে। এ মামলা কিন্তু আমাদের সরকার দায়ের করেনি; করেছে তাদের পছন্দের তত্ত্ববধায়ক সরকার ২০০৭ সালে। কারণ ইয়াজউদ্দিন সাহেব খালেদা জিয়ার দলের মানুষ ছিলেন, তাকে খালেদা জিয়া ও বিএনপিই রাষ্ট্রপতি বানিয়েছিলেন।
‘ফখরুদ্দিনকে ওয়াশিংটন থেকে ধরে এনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করা হয়েছিল। সেই সরকার সেনা সমির্থিত ছিল। তখন যিনি সেনাপ্রধান ছিলেন সাতজনকে ডিঙিয়ে খালেদা জিয়া তাকে সেনাবাহিনীর প্রধান বানিয়েছিলেন। তাদের পছন্দের মানুষই, যখন ক্ষমতায় তখনই এই মামলা দায়ের হয়েছিল। আমাদের সরকার যদি প্রতিহিংসাপরায়ণ হতো, তাহলে তো মামলা আমরা নিজেরা করতাম। আর মামলার রায় হওয়ার জন্য ১৪ বছর অপেক্ষা করতে হতো না।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, তারেক রহমান এবং জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে এই মামলাটি বিএনপির পছন্দের তত্ত্বাবধায়ক সরকারই দায়ের করেছিল। সেই মামলায় তাদের শাস্তি হয়েছে।
বিএনপি বিদেশিদের কাছে ধরণা দিয়ে চলে। আইন-আদালতের প্রতি তাদের কোন শ্রদ্ধা নেই।
তিনি বলেন, ‘আসলে আইন, আদালত কোন কিছুর ওপর তাদের (বিএনপি) আস্থা নেই এবং কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা করে না। শুধু ক্ষণে ক্ষণে বিদেশিদের কাছে যায়, আমরা বিদেশিদের কাছে যাই না, বিদেশিরা প্রয়োজনে আমাদের কাছে আসে।’
তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে এক প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে আগেও একটি রায় ছিল, তাকে রহমানের কোনো বক্তব্য পত্র-পত্রিকা বা টেলিভিশনে প্রচার করা যাবে না। প্রধান সারির গণমাধ্যম তারেক রহমানের কোনো বক্তব্য প্রচার করে না। কিন্তু মাঝেমধ্যে কেউ কেউ ভুল করে করে এবং স্যোশাল মিডিয়ায় করে, ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার হয়। আমি মনে করি এগুলো হচ্ছিলো বিধায় আদালত আবার সাপ্লিমেন্টারি রায় দিয়েছে। কেউ যদি সেটার ব্যত্যয় ঘটায় তবে নিশ্চিতভাবে আদালত অবমাননা হবে, আদালত অবমাননা হলে আদালত সেক্ষেত্রে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এ সময় তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকরের উদ্যোগ নিতে ব্রিটিশ সরকারের সাথে আলাপ-আলোচনা চলছে বলেও জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী।