আইপিএলের সবশেষ আসরে শেষ ওভারে টানা পাঁচ ছক্কা হাঁকিয়ে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে জয় এনে দিয়েছিলেন রিঙ্কু সিং। এরপর লাইমলাইট পেলেও জাতীয় দলের দরজা খুলছিল না কিছুতেই। অবশেষে ভারতীয় জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন রিঙ্কু। কিন্তু খুব বেশি আকাশ-পাতাল ভাবতে নারাজ তিনি। বরং সুযোগ পেলে যত বেশি সম্ভব রান করতে চান তিনি। সেই সঙ্গে একটা ব্যক্তিগত লক্ষ্যের কথাও জানিয়েছেন রিঙ্কু।
এশিয়ান গেমস ক্রিকেট ও আয়ারল্যান্ড সফরের জন্য জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন রিঙ্কু সিং। ভারতীয় দলের হয়ে প্রথমবার খেলার সুযোগ পেয়ে খুশি কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে নজর কাড়া এই ব্যাটার। একাদশে জায়গা পেলে যত বেশি সম্ভব রান করতে চান তিনি। পাশাপাশি, তিনি চান গরিব বাবা এবার গ্যাস সিলিন্ডার বয়ে বেড়ানোর কাজ বাদ দিয়ে বাড়িতে আরাম করুন।
সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রিঙ্কু বলেন, ‘আমার কাজ রান করে যাওয়া। ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলে ভালো খেলার চেষ্টা করব। এর থেকে বেশি ভাবি না। বর্তমানে বাঁচতেই ভালোবাসি। ঈশ্বর নিশ্চয়ই আমাকে এ ভাবেই ভালো রাখবেন। পরিশ্রমটা শুধু আমি করে যেতে পারি। সেটাই ভাল করে করতে চাই। বাবা-মা, ভাই, ছোটবেলার কোচ মাসুদ আমিনি সবাই খুশি। সবাই চাইত আমি ভারতের হয়ে খেলি।’
ছোটবেলা থেকে দারিদ্র্য দেখে এসেছেন রিঙ্কু। বাবাকে দেখেছেন বাড়ি বাড়ি রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার বয়ে নিয়ে যেতে। বড় হয়ে নিজেও বাবাকে সাহায্য করেছেন এই কাজে। ক্রিকেট খেলে অবস্থা অনেকটাই বদলে দিয়েছেন রিঙ্কু। নতুন বাড়ি নিয়ে সেখানে মা বাবাকে নিয়ে গেছেন। রিঙ্কুর চাওয়া এবার বাবা এই কঠিন কাজ ছেড়ে দিয়ে বাড়িতে আরাম করুন।
তিনি বলেন, ‘বাবাকে বলেছি এ বার তুমি আরাম করো। কিন্তু এখনও সিলিন্ডার বয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ওই কাজটা উনি ভালবাসে। কিছু কিছু সময়ে আমিও ওনার ব্যাপারটা বুঝি। জানি যে বাড়িতে আরাম করা শুরু করলে খুব তাড়াতাড়ি একঘেয়ে লাগবে। সারা জীবন ধরে যদি কেউ কাজ করেই যায়, তা হলে সে নিজে না চাইলে থামানো সম্ভব নয়।’
আইপিএলে বেশ কয়েক মৌসুম থেকে খেললেও আগে সেভাবে নজর কাড়তে পারেননি। কিন্তু গত আইপিএলে গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে শেষ ওভারের শেষ পাঁচ বলে টানা ছক্কা হাঁকিয়ে কলকাতাকে অবিশ্বাস্যভাবে ম্যাচ জিতিয়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেন তিনি। এরপর গোটা আসরেই ব্যাট হাতে পারফর্ম করেছেন। গোটা ভারত এখন রিঙ্কুকে চেনে। কিন্তু রিঙ্কু চান না তাকে নিয়ে এতো মাতামাতি হোক।
তিনি বলেন, ‘জীবন অনেকটাই বদলে গিয়েছে। এখন আমাকে অনেক বেশি লোকে চেনে। কিন্তু তা বলে বেশি বাড়াবাড়ি ভাল না। তা হলে অহংবোধ এসে যায়। আমি সব কিছু স্বাভাবিক রাখতে চাই এবং স্বাভাবিক ভাবে ক্রিকেট খেলতে চাই।’