সাইদুজ্জামান রেজা, পঞ্চগড়।।
পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় বার্ষিক ও রাজস্ব উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) প্রকল্পের কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।ভুয়া প্রকল্প গ্রহণ, ভুয়া সভাপতি,কোনো কাজ না করলেও পুরো বিল উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে দপ্তরটির বিরুদ্ধে। উন্নয়নের নামে বরাদ্দকৃত টাকা নয়ছয় অনিয়ম ও দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলেও যেন দেখার কেউ নেই।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আটোয়ারী উপজেলা প্রকৌশলীর দেয়া তথ্যমতে, ২০২২-২৩ অর্থ বছরের বার্ষিক ও রাজস্ব উন্নয়ন সহায়তা খাতের জন্য ৪০টি স্ক্রীমে প্রায় ৮২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।এর মধ্যে দরপত্রের মাধ্যমে ২৫ টি স্ক্রীমের জন্য ৪ টি দরপত্রের মাধ্যমে প্রায় ৬০ লাখ এবং প্রকল্প সভাপতির মাধ্যমে ১৫টি প্রকল্পে ২২ লাখ ১৯ হাজার টাকা।এই প্রকল্পের তালিকায় দেড় লাখ টাকা ব্যয়ে বলরামপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে কৃষি কাজের সুবিধার্থে আরসিসি রিং পাইপ সরবরাহ ও স্থাপন করার কথা কিন্তু বাস্তবায়ন না করে বিল উত্তোলন করা হয়েছে। তবে প্রকল্প সভাপতি জবা রানী জানেন না তার নামে প্রকল্প নেয়া হয়েছে।
এদিকে দুই লাখ টাকা ব্যয়ে আটোয়ারী আদর্শ মহিলা কলেজে আসবাবপত্র মেরামত করন প্রকল্প নেয়া হয়।কিন্তু কোন কাজ না করেই বিল উত্তোলন করা হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান বলেছেন, তাকে ৪২ হাজার টাকা দিয়েছেন ইউএনও অফিসের সুজন। সেটা দিয়ে কিছু আসবাবপত্র কিনেছেন।প্রকল্পের সভাপতি রাধানগর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য হাফিজা বেগম বলেন,প্রকল্প সম্পর্কে জানিনা তবে ইউএনও অফিসের সুজন ও এলজিইডি অফিসের বেলাল ডেকে স্বাক্ষর নিয়েছিল।
তোড়িয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন মুক্তার নামে ২ লাখ টাকা ব্যয়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গরীব অসহায় পরিবারের মাঝে নলকূপ সরবরাহ ও গোড়া পাকা করন এবং দের লাখ টাকা ব্যয়ে রাস্তার জলাবদ্ধতা দূরীকরনের জন্য এক ফুট ডায়া বিশিষ্ট রিং পাইপ সরবরাহ করন। কিন্তু ইউপি সদস্য জানেননা তার নামে প্রকল্প নেয়া হয়েছে। পরে তিনি তার বাবা এনামুল হককে ফোন দিয়ে জানেন তার নামে দুইটা প্রকল্প নেয়া হয়েছে।
উপজেলার একাত্তর আশ্রায়ন প্রকল্পের পুকুর পাড়ে মাটি ভরাট ও প্যালাসাইডিং করার জন্য ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।প্রকল্পের সভাপতি ইউপি সদস্য পশিরুল ইসলাম। প্যালাসাইডিং করা না হলেও পুকুরে কিছু মাটি ভরাট করা হয়েছে কিন্তু সভাপতি পশিরুল ইসলাম বলতে পারেননা সেটা কোন প্রকল্পের মাটি কারন, তার নামে আরো ২০২২-২৩ অর্থ বছরের জেলা প্রশাসকের টিআর বরাদ্দ আছে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা ঐ পুকুরটি খনন, সৌন্দর্য বর্ধন করার জন্য।
ইউপি সদস্য পশিরুল ইসলাম বলেন,কি প্রকল্প, কি কাজ জানিনা। উপজেলা নির্বাহী স্যারের সাথে ঘুরেন অফিসের সুজন, সে স্বাক্ষর চেয়েছেন, চেয়ারম্যানকে অবহিত করে স্বাক্ষর দিয়েছি।
উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ ফয়সাল জানান,কাজ চলমান রয়েছে, টাকা উত্তোলন করে বিডি করে রাখা হয়েছে। কাজ শেষ হওয়ার পর টাকা তুলতে পারবেন।প্রকল্প সভাপতি না জানার বিষয়টি চেয়ারম্যানরা বলতে পারবেন বলে জানান তিনি।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ তৌহিদুল ইসলাম জানান, প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করেন, তারাই কাজ বাস্তবায়ন করেন।